সেনাবাহিনীতে নিয়োগ পাওয়ার জন্য বেশ কিছু কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ন হতে হয় যার মধ্যে রয়েছে শারীরিক কসরত, মেডিকেল টেস্ট, লিখিত এবং সেই সাথে মৌখিক পরীক্ষা। আর এই সকল কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে প্রথম হয়েছেন বাগেরহাটের ইব্রাহিম, কিন্তু তার এই সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সেনাবাহিনীতে নিয়োগে বড় ধরনের এক বাধা তার স্থায়ী ঠিকানা না থাকা। এই কারনে এই যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীর পরিবারের সদস্যরা হতাশ। বিশেষ বিবেচনার মাধ্যমে হলেও ইব্রাহিমের সৈনিক পদের চাকরিটা দেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন ঐ এলাকার মানুষেরা। তার বিষয়টি জানার পর স্থায়ী ঠিকানা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক।
ইব্রাহিমের স্বপ্ন ছিল সেনাবাহিনীতে যোগ দেবার। সেই সুপ্ত ইচ্ছা থেকেই সৈনিক পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেন খুলনা জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্টে। চলতি বছরের ১২ সেপ্টেম্বর সব পরীক্ষাতেই উত্তীর্ণ হন তিনি। শেষ পর্যন্ত থাকেন তালিকার শীর্ষে। কিন্তু ভূমিহীন হওয়ায়, অর্থাৎ স্থায়ী ঠিকানা না থাকায় চাকরি হয়নি তার।
বাগেরহাট শহরতলীর হরিণখানা গ্রামের খুপড়ি ঘরে বসবাস ইব্রাহিমের পরিবারের। লেখাপড়ার পাশাপাশি পরিবারকে আর্থিক যোগান দিতে করেন ইলেকট্রিক ও রাজমিস্ত্রির কাজ।
দেশের জনপ্রিয় এক টিভি চ্যানেলকে ইব্রাহিম জানান, ছোটবেলায় বাবা ছেড়ে গেছে তাদের। বিভিন্ন জায়গায় থেকে অনেক কষ্টে তার মা লেখাপড়া শিখিয়েছেন। পরিবারের সবার প্রত্যাশা ছিল, ইব্রাহিমের চাকরি হলে ঘুচবে দুর্দিন। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি।
স্থানীয় সুশীল সমাজের লোকজনও বিশেষ বিবেচনায় ইব্রাহিমের চাকরি নিশ্চিত করে দেশসেবার সুযোগ দেয়ার দাবি জানাচ্ছেন। বিষয়টি বিশেষ বিবেচনার জন্য সেনাপ্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ইব্রাহিম ও তার পরিবার।
প্রসঙ্গত, এর আগে দুই তরুনী পুলিশের নিয়োগ পরীক্ষায় অত্যন্ত ভালো ফলাফল করলেও তাদের নিয়োগে বাণনধা হয়ে দাঁড়ায় তাদের স্থায়ী ঠিকানা না থাকার কারনে। তবে পরবর্তীতে তাদের স্থায়ী ঠিকানা সৃষ্টির মাধ্যমে পুলিশে নিয়োগের নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়। সেই সময় প্রশ্ন উঠেছিল, তাদের এ দেশের নাগরিকত্বের সনদ এবং জাতীয় পরিচয় পত্র রয়েছে। তাহলে তারা কেন চাকরি পাবে না। তাদের বিষয়টি সমাধান হলেও এই নিয়মটি সরকারী নীতি নির্ধারনী মহলের বিবেচনার মাধ্যমে নতুন নীতি প্রনয়ন করা উচিৎ বলে মনে করেন অনেকে।