আধুনিকতার ছোয়ায় মানুষের চলন বলন কথা বার্তার অনেক পরিবর্তন এসেছে। এখনকার সময়ে কার কি আছে সেটা বড় কিছু নয়, কে কতো শো-আপ করতে পারে সেটাই বেশি নজরে আসে মানুষের। পোষাক ও পেসান নিয়ে মানুষের মধ্যে নানা ধরনের বিকর্ত রয়েছে। জাতপাত ও পষাকের মধ্যে অনেকেই গুলিয়ে ফেলে নানা ধরনের মন্তব্য করে থাকেন। সম্প্রতি পোষাক, প্যাশান ও বডি শো নিয়ে তাসলিমা নাসরিনের ( Taslima Nasrin ) একটি পোষ্ট যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়েছে না তার। এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর করা ওই একটি পোস্টে উঠে এসেছে ‘বডি শেমিং’-এর অভিযোগ। তিনি তসলিমাকে মনে করিয়ে দেন যে, অন্য মানুষের শারীরিক গঠন নিয়ে অ’’শ্লীল মন্তব্য করার অধিকার তার নেই।
বডি শেমিং এখন একটি মানসিক ও সাংস্কৃতিক ম’’হামারী। দেশে-বিদেশে এর আ’’তঙ্ক। প্যারিসের ফ্যাশন দৃশ্য থেকে আমার অভ্যন্তরীণ বৃত্ত, তারকা থেকে সাধারণ মানুষ… সে কাউকেই ছাড়ে না। নেটে এরকম অনেক উদাহরণ আছে। অনেকে অন্য মানুষের শারীরিক আকার, রঙ, সাজসজ্জা এবং তাদের অ’ঙ্গ-প্র’ত্যঙ্গের বিকৃতি নিয়ে মজা করে। তসলিমাও কি সেই তালিকায় নাম লিখিয়েছেন? বুধবার তসলিমার যোগযোগ মাধ্যমের একটি পোস্ট ঘিরেও একই প্রশ্ন করেছেন নেটিজেনরা।
ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমি সুগোল সুদোল দৃঢ় স্তন দেখতে ভালোবাসি। মেয়েরা সুন্দর দেখায় যখন তারা স্তন এবং ক্লিভেজ দেখানো পোশাক পরে। সুদর্শন পুরুষরা শোভাময় বাইসেপ সহ হাফপ্যান্ট বা স্লিভলেস টি-শার্ট পরতে পছন্দ করে, গভীর V ঘাড়ের টি-শার্টে বুকের চুল দেখা যায়, মেয়েরা মিনি শর্টস পরতে পছন্দ করে যাতে ভালো আকৃতির পায়ে কিছু নিতম্ব দেখা যায়, ক্লিভেজ বা অর্ধ স্তন দেখা যায়, দেখানো ছোট টপ পরলে দেখতে বেশ লাগে’।
পোস্টটি সেখানেই শেষ নয়। পুরো পোস্ট জুড়ে তার করা সব মন্তব্য দেখে নেটিজেনরা খুবই বিরক্ত! তসলিমা লেখেন, ‘কিন্তু আজকাল যা হয়েছে তা হল, যাদের স্তন দেখতে সুন্দর নয়, ঝুলে পড়া বা প্রায় চ্যাপ্টা, তারাও, বিশেষ করে সাংস্কৃতিক জগতের সেলিব্রিটিরা গভীর ভি-নেক পোশাক পরেন। আমি বুঝতে পারছি না কেন তিনি এটি পরেন, কী দেখাবেন। আর বিশাল বাপুর কুৎসিত পুরুষরাও আঁটসাঁট পোশাক পরে চলাফেরা করে। চোখ নাড়াতে পারলে বাঁচতাম!
তিনি আরও লিখেছেন, ‘সাঁতারের পোশাক পরা একটি ছেলে এবং একটি বিকিনি পরা একটি মেয়েকে সমুদ্র সৈকতে বা লেকের ধারে সূর্যস্নান করতে দেখে স্বস্তিদায়ক। বাচ্চাদের কিছু না পরা দেখলে মনে প্রশান্তি আসে। শহরের কোলাহলে মানুষের প্রকৃতির কথা অনেকটাই ভুলে গেছি।
তসলিমার লেখার নীচে একজন মন্তব্যকারী বলেছেন, আপনি যা বলেছেন তা বডি শ্যামিংয়ের বিভাগে পড়ে। বর্ণনাগুলি আপনার কাছে সুন্দর হলেও সেগুলি তাদের কাছে সুন্দর না হলেও। আপনি সেগুলি ভাগ করে নেওয়ার আনন্দ থেকে চোখ সরিয়ে নিতে পারেন। জনসমক্ষে লিখলে তারা যে অপমানিত হয় সে বিষয়ে আমাদের সংবেদনশীলতা থাকতে হবে।
তবে তসলিমা বলেছেন কে কী পরবে তা ঠিক করার তিনি নন। সে অধিকার তার নেই। তিনি শুধু কি দেখতে পছন্দ করেন তা প্রকাশ করেন! তবে একজন লেখকের কাছ থেকে কী আশা করা যায়, সেই প্রশ্ন তুলেছে নেটদুনিয়া!
তসলিমা নাসরিন একজন কবি সাহিত্যিক অন্যদিকে চিকিৎসক। তিনি বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্কিত সব ঘটনা গুলোকে নিয়ে মন্তব্য করে আলোচনায় আসেন। এর আগেও তিনি পোশাক, ব্যক্তি, দেশের সমাজ ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করে বেশ সমালোচনার মুখে পড়েছেন অনেক বার।