আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছেন বলেই এই ক্যান্টনমেন্ট। এই ক্যান্টনমেন্ট ঢুকলে আমার বিরুদ্ধে মামলা…। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি সেদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যেদিন সুযোগ পাব এই ক্যান্টনমেন্ট থেকে তাকে বের করে দিব। তিনি বলেন, আমি শুধু বলেছিলাম আজকে আমাকে ঢুকতে দাও না, যখন জিয়াউর রহমান ঘরে তুলতে চায়নি প্রতিদিন তো আমাদের বাসায় যেয়ে কান্নাকাটি করতা।
ব্রিটেনে স্থানীয় সময় সোমবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া এক সংবর্ধনায় শেখ হাসিনা বলেন, তার ছেলে কোকো মারা গেছেন। সে যখন আমার বাবা-মা, ভাই-বোনের মৃত্যু দিবসে উৎসব করে, কিন্তু আমিতো মানুষ, আমিতো একজন মা। ভেবেছিলাম আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, সব মানুষের ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব আমার। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, খালেদা জিয়ার কাছে গিয়ে সহানুভূতি জানাব। সামরিক সচিব আমার পক্ষে যোগাযোগ করেছিলেন। সময় ঠিক হলো।
গুলশানে যেখানে ছিলো সেখানে গিয়েছি। আমার মুখের উপর তালা দিয়েছিল, ঢুকতে দেয়নি, কী অপমান ভাবছ। আজকে আপনি প্রধানমন্ত্রী হলে কি করতেন? আপনি চিন্তা করেন?
শেখ হাসিনা বলেন, আমাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি শুধু বললাম, আজকে আমাকে ঢুকতে দাও না, যখন জিয়াউর রহমান ঘরে তুলতে চায়নি প্রতিদিন আমাদের বাসায় গিয়ে কান্নাকাটি করতা। আমার বাবার বদৌলতে তুমি নিজেকে জিয়াউর রহমানের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতে পেরেছেন। না হলে জিয়া অনেক আগেই হাল ছেড়ে দিতেন। জিয়ার নতুন গার্লফ্রেন্ডও ছিল। তাকেও সরিয়ে দেওয়া হয়। আমার বাবা তার পরিবারকে বাঁচিয়েছেন।
আমাদের বাসায় গিয়ে তো মোড়া পেতে বসে থাকতো। আপনি আমাকে সেখানে ঢুকতে না দিয়ে আমাকে অপমান করেছেন। আমি কিছু বললাম না। আমার কিছু বলার নেই। আমি দেখতে পাচ্ছি ভিতরে তাদের সব নেতা। আমি দেখতে পাচ্ছি গেটে তালা, কিছু করার নেই তাদের।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, জাতির পিতার কন্যা হিসেবে নিরাপত্তা আইন করা হয়েছিল। ওই আইন অনুযায়ী রেহানাকে ধানমন্ডির ৬ নম্বর রোডে একটি ছোট বাড়ি দেওয়া হয়। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলে ওই বাড়িটি দখলে নেন। আমরা যারা সেখানে ছিলাম তারা তাদের বের করে দিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে পরিণত করা হয়। একটা প্রধানমন্ত্রী গেলো পুলিশ ফাঁড়ি উদ্বোধন করতে, লাল টুকটুকে শাড়ি পরে। তিনি যখন এই পুলিশ ফাঁড়ি উদ্বোধন করেন, তখনও রেহানার নামে বাড়িটি নিবন্ধিত ছিল। রেহানা, আপনারা জানেন সে একটা ব্যক্তিত্ব নিয়ে চলে, পুলিশ ফাঁড়ি যখন করেছে সে বলে ঠিক আছে ওটা পুলিশকেই দিয়ে দিলাম। সে বাড়ি আর নেয়নি।
তিনি বলেন, আমি ক্যান্টনমেন্টে ঢুকব, এমন সময় কয়েকজন আহত হয়। আমাকে গেট থেকে যেতে দেবে না। আমি তখন প্রধান বিরোধীদলীয় নেতা। আমার পতাকাবাহীকে আটকানো হয়েছিল। সেখান থেকে নেমে হাঁটা শুরু করলাম। আমি যখন হাঁটতে শুরু করলাম, অনেক লোক জড়ো হয়ে গেছে। চার কিলোমিটার হেঁটে CMH এ গেলাম। সিএমএইচের গেট বন্ধ, আমাকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কেন আমি ক্যান্টনমেন্ট রোডে হাঁটলাম! আমার সঙ্গে যারা ছিল তাদের সবার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।আমার বাবা দেশ স্বাধীন করেছিল বলেই না এই ক্যান্টনমেন্ট, আর মেজর জিয়া। আরে, এই মেজর পদন্নতিটা আমার বাবা দিয়েছিলেন। আর আমার বিরুদ্ধে ক্যান্টনমেন্টে মামলা …. সেদিন প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, ওই ক্যান্টনমেন্টে আর বসবাস করা লাগবে না। যেদিন সুযোগ পাবো বের করে দেবো। বের করে দিছি।