ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গণমাধ্যমকে ভিসা নীতির ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মাহফুজ আনামকে লেখা চিঠিতে তিনি এ কথা জানান।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মাহফুজ আনাম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গণমাধ্যমের ভিসা নীতিমালা নিয়ে রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে চিঠি পাঠান। পিটার হাস ২৮ সেপ্টেম্বর সেই চিঠির জবাব দেন।
চিঠিতে পিটার হাস বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের অধিকার এবং মিডিয়া আউটলেটদের বিশ্বব্যাপী তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার প্রয়োগের অধিকার রক্ষা করে।” তদনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ যেকোনো সরকারের সমালোচনামূলক মতামত অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রকৃতপক্ষে আমরা আমাদের নীতির যেকোনো উপাদানে জনসাধারণের প্রতিফলনকে স্বাগত জানাই।
সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেন, গত ২৪ মে ৩-সি ভিসা নিষেধাজ্ঞার নীতি ঘোষণা করার সময় বলেছিলেন যে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব প্রত্যেকের – ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, নিরাপত্তা বাহিনী, সুশীল সমাজ এবং মিডিয়া। সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ, এই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় তাদের নিজ নিজ ভূমিকা পালনের সুযোগ দিতে হবে। সেক্রেটারি ব্লিঙ্কেনের বক্তব্য পরিষ্কার ছিল। নীতিটি যে কোনো বাংলাদেশি ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যাকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা হবে।
আমরা সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে যাব। যারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করতে চায় তাদের বিরুদ্ধেও আমরা কথা বলব এবং আমাদের ভিসা নীতি প্রয়োগ করব।
এদিকে বাংলাদেশের গণমাধ্যমেও ভিসা নীতিমালা প্রযোজ্য হতে পারে- এমন মন্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ২৪ সেপ্টেম্বর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টুয়েন্টিফোরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আগামী দিনে মার্কিন ভিসা নীতিতে রাজনৈতিক দল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সাবেক ও বর্তমান সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে ।
এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি মাহফুজ আনাম ২৭ সেপ্টেম্বর ইমেইলের মাধ্যমে পিটার হাসকে একটি চিঠি পাঠান। চিঠিতে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে ভিসা নীতির আবেদন তার মনে কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। তিনি বলেন, অকপটে বলতে গেলে এই মন্তব্য আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। তাই ব্যাখ্যা চাওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, মার্কিন সরকার এবং রাষ্ট্রদূত ব্যক্তিগতভাবে সবসময় একটি মুক্ত ও স্বাধীন গণমাধ্যমের কট্টর সমর্থক। তাই এই মন্তব্য আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে।
সম্পাদক পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনামের চিঠির প্রেক্ষিতে ২৮ সেপ্টেম্বর মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তাকে চিঠি পাঠান। চিঠিটি ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকার মার্কিন দূতাবাস প্রকাশ করেছ।