ফেইসবুক এ দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে গুজব ছড়ানোর অপরাধে রাজবাড়ী থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এক নারীকে। আর এটি এখন দেশের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনিত হয়েছে। জানা গেছে বুধবার (৫ অক্টোবর) স্মৃতির বিরুদ্ধে ১৫৩/৫০৫ ধারায় মামলা করা হয় এবং ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। এ সময় আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) রাতে রাজবাড়ী পৌরসভার বেড়াডাঙ্গা এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত সোনিয়া আক্তার স্মৃতি রাজবাড়ী পৌরসভার বেড়াডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা। তিনি দুই সন্তানের জননী। তার স্বামী খোকন আহমেদ সৌদি প্রবাসী।
গ্রেফতারের আগে সোনিয়া আক্তার ফেসবুক লাইভে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মাঝরাতে আমাকে ধরতে আসছেন কেন? আমি পালিয়ে যাচ্ছি না। আমার দুটি ছোট বাচ্চা আছে। আমি তাদের রাখি। আমাকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় দিন। আমি স্বেচ্ছায় চলে বের হচ্ছি। তিনি ফেসবুকে সবাইকে জানিয়েছেন, তিনি ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে গত ৩১ আগস্ট সোনিয়া তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে উল্লেখিত মিথ্যা, বানোয়াট ও মানহানিকর বক্তব্য প্রকাশ করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে তিনি তার ফেসবুকে সরকার ও প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন উন্নয়নের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য প্রচার করেন। ফলে সমাজের অনেকেই ভুল তথ্য জানে।
এদিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. সামছুল আরেফিন চৌধুরী বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় স্মৃতির বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেন। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ দণ্ডবিধির ১৫৩ ও ৫০৫ ধারায় রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা গ্রহণ করে।
মামলার বাদী সামসুল আরেফিন চৌধুরী জানান, সোনিয়া তার ফেসবুকে ৩১ আগস্ট আপত্তিকর পোস্ট দেন। কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার করার সময় পোস্টটি আমার নজরে আসে। এর আগেও এ ধরনের আপত্তিকর কথা বলেছেন তিনি। গত ৩রা অক্টোবর সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন জানান, মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে সোনিয়াকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাকে আদালতে হাজির করা হলে তিনি জামিনের আবেদন করেন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ দিকে স্মৃতিকে গ্রেফতারের পর থেকে সারা দেশে উঠেছে নানা ধরনের প্রতিবাদ। দেশের অনেক বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গরা তার মুক্তির দাবি জানাচ্ছে। এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলছে বেশ তোলপাড়।