রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডে সাংবাদিক বর্ষী খাতুন ওরফে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নিহত হয়েছেন। কুষ্টিয়ার এক মুসলিম পরিবারে জন্ম নেওয়া সাংবাদিকের নাম বর্ষী খাতুন, তবে ঢাকায় এসে অভিশ্রুতি শাস্ত্রী নামে সাংবাদিকতা করেন। সে নিজেকে হিন্দু বলে পরিচয় দিয়ে মন্দিরে পূজা করত। ফলে তার পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দেয়।
এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরাসরি প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন দেশের জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা শেখ আহমদুল্লাহ। সেখান থেকে একটি উত্তর নির্বাচন করা হয়।
মাসুম আহমেদ নামের এক ব্যক্তি জানতে চাইলেন, নিহত নারী সাংবাদিক বর্ষী খাতুন মুসলিম পরিবারের সন্তান ছিলেন। তবে তিনি নিজেকে হিন্দু বলে পরিচয় দিয়ে মন্দিরে পূজা করতেন। তার লাশ দাফন করতে হবে নাকি দাহ করতে হবে?
উত্তরে শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা বলতে চাই, কেউ যদি মন্দিরে যায়, পুজা করে এবং তার নাম পরিবর্তন করে থাকে, নিজেকে হিন্দু পরিচয় দেয়, তাহলে তাকে মুসলিম গণ্য করার কোনো সুযোগ নেই। বাবা-মার খারাপ লাগলেও বাস্তবতা হলো, সন্তান-সন্ততি যখন ছোট বেলা থেকে পর্যাপ্ত দ্বীনি শিক্ষা না পায় এবং পরিবার থেকে দ্বীনের চর্চার ঘাটতি থাকে, তখন নানাভাবে তারা বিপথগামিতার পথে চলে যান। সে দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো মানুষ যদি এমন কোনো কাজ করে, যার ফলে সে ইসলাম থেকে খারিজ (বাহির) হয়ে যায়, যেমন সে শিরকে লিপ্ত হলো প্রকাশ্যে তাহলে সে আর মুসলমান থাকে না।’
তিনি বলেন, ‘আর এ অবস্থায় যদি কেউ মৃত্যুবরণ করেন, তাহলে তাকে মুসলমানদের কবরে দাফন নয় বরং হিন্দুদের নিয়ম অনুযায়ী তাকে সৎকার করবে। তবে মেয়েটির বাবা-মার সঙ্গে মন্দিরের দায়িত্বরত ব্যক্তিবর্গদের যে বিতর্ক হয়েছে, সেখানে মা-বাবার সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে সেটা খুব দুঃখজনক। এখানে অনেক মা-বাবার জন্য অনেক শিক্ষা রয়েছে যে, ছেলে মেয়েদেরকে উচ্চ শিক্ষার নামে তাদেরকে যেখানে সেখানে পাঠাচ্ছেন। দ্বীন ধ্বংস করছেন। সে বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে এভাবে মারা যাবে তাদের মা-বাবা কেউ চিন্তা করেনি। এখানে সমাজের একটি বাস্তবতা ফুটে উঠেছে। আমাদের সন্তানদের দ্বীনদারিতার ক্ষেত্রে যদি আমরা গাফলতি করি, তাহলে আমাদের চরম মূল্য দিতে হতে পারে। আমাদের অজান্তে আমাদের সন্তান নষ্ট হয়ে গেলে, এর জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতা আছে। অতএব, শিক্ষার নামে তাদেরকে দিয়ে দিলাম আর তারা যা খুশি করলো, তা গ্রহণযোগ্য নয়।’