তিন বছর আগে হাত হারানো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার ১৩ বছর বয়সী নাঈম হাসান নাহিদকে ৩০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কারখানায় কাজ করতে গিয়ে হাত হারায় শিশুটি।
আদেশে এপ্রিল মাসে 15 লক্ষ টাকা এবং এই বছরের ডিসেম্বরে 15 লক্ষ টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১০ ধাপ পর নাঈম হাসান নাহিদ জমার টাকা তুলতে পারবেন। এছাড়া শিশুটি এইচএসসি পাস না করা পর্যন্ত তাকে প্রতি মাসে সাত হাজার টাকা দিতে বলা হয়েছে। ভৈরবের নূর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিককে এই আদেশ বাস্তবায়ন করতে হবে।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার অনিক ও হক এবং মো. বাকির উদ্দিন ভূঁইয়া। ওয়ার্কশপের মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কামরুল ইসলাম।
এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর শিশু নাঈম হাসানের ক্ষতিপূরণের রুলের ওপর শুনানি হয়।
2020 সালের 1 নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ভৈরবে শিশুশ্রমের ভয়াবহ পরিণতি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। জানা গেছে, নাঈম হাসানের বয়স তখন ১০ বছর। সে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা গ্রামে। তার বাবা আনোয়ার হোসেন একজন জুতা ব্যবসায়ী। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই বেকার হয়ে পড়েন আনোয়ার। সে সময় পরিবারের চাপ সামলাতে নাঈমের বাবা-মা তাকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে একটি ওয়ার্কশপে কাজ করিয়ে দেন। এই ওয়ার্কশপে কাজ করার সময় তার ডান হাত মেশিনে লেগে যায়। অবশেষে, ডান হাতটি অস্ত্রোপচার করে কনুইতে কেটে ফেলা হয়েছিল।
2020 সালের ডিসেম্বরে, শিশুটির বাবা প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন। শিশুটিকে কেন ২ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। আসামিদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসককে তার দপ্তরের একজন কর্মকর্তা দিয়ে ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। আগের সিরিজে এই রায় শোনা গিয়েছিল।