গত বুধবার (১৭ আগস্ট) সন্ধা ৬ টার দিকে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন শিক্ষক দম্পতি জিয়াউর রহমান মামুন ও তার শিক্ষিকা স্ত্রী জলি আক্তার। পরবর্তীতে বিষয়টি পুলিশকে অবগত করা হলে নিখোঁজের একদিন পরেই গাজীপুরের নিমতলী হায়দ্রাবাদ ব্রিজ এলাকায় থেকে নিজেদের প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে তাদের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরই মধ্যে তাদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
তবে ময়নাতদন্ত শেষে ওই দম্পতির ফুসফুস ও কিডনিতে রক্ত জমাট বেঁধেছিল। তাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করতে নমুনাগুলো রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ঢাকার সিআইডি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. শফি মোহাইমেন।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে লাশ দুটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় দুজনের ফুসফুস ও কিডনিতেও প্রায় একই উপসর্গ পাওয়া গেছে। তাদের দুজনের ফুসফুসে ও কিডনিতে রক্ত জমাট বেঁধেছিল। এটি সাধারণত ফুড পয়জনিং বা অন্য কোনো কারণে হতে পারে। তাই তাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত করতে নমুনাগুলো রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ঢাকার সিআইডি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের বাড়ি নগরীর গাছা থানার বড়বাড়ির জয়বাংলা রোডের বগার্টেকে। গাছা থানার পরিদর্শক নন্দলাল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহত শিক্ষক দম্পতির ছেলে মো. মিরাজ জানান, টঙ্গীর কামারজুরী এলাকার বাসা থেকে একই গাড়িতে স্কুলের উদ্দেশে রওনা হন ওই শিক্ষক দম্পতি। স্কুল শেষে সন্ধ্যা ৬.২০ মিনিটে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। কিন্তু এরপর থেকে তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
মিরাজ জানান, মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় মায়ের কথাবার্তায় ক্লান্তির অনুভূতি ছিল। অনেকক্ষণ পরও বাসায় না আসায় তিনি আবার ফোন করলে কেউ রিসিভ করেনি। একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। স্বজনরা রাতভর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে তাদের হদিস পাননি। এ সময় তারা গাছা থানা, টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানা এবং পূবাইল থানায়ও যোগাযোগ করেন।
মিরাজ বলেন, বড় চাচা ও ফুফাকে সাথে নিয়ে পূবাইল থানায় খোঁজ করে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ফেরার পথে বাড়ির কাছে গাছা থানাধীন বড়বাড়ির বগারটেক এলাকায় হারবাইদ-বড়বাড়ি সড়কের পাশে বাবার প্রাইভেটকার দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। আমি গাড়ির কাছে গিয়ে দেখি ড্রাইভারের সিটে আমার বাবার ঠান্ডা ও নিথর দেহ এবং তার পাশের সিটে আমার মা (সামনে)। আমরা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে বোর্ডবাজারের তায়রুন্নেছা মেমোরিয়াল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে উত্তরা নস্ট্রাম নামে আরেকটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে পুলিশের এক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, মৃ্তদেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে এটি হত্যাকাণ্ড কিনা সে বিষয়টি রীতিমতো খুঁজে দেখা হচ্ছে।