সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে শহীদ জীয়া ও জাইমা রহমানকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে বেশ আলোচনায় আসেন ডা. মুরাদ হাসান। আর এরই মধ্যে গত রোববার চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির সঙ্গে একটি ফোনালাপ ফাঁস হতেই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে বাধ্য হয়েই মন্ত্রসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
তবে মুরাদের পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার খবরে ফেসবুকে কেঁদে ভাইরাল হন রানা নামে স্থানীয় এক যুবক। ভিডিওতে নিজেকে উপজেলা যুবলীগের সদস্য দাবি করলেও তিনি ওই সংগঠনের কেউ নন বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা যুবলীগ সভাপতি একেএম আশরাফুল ইসলাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এমডি রানা (২৬) উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর গ্রামের আসাদের মেজ ছেলে। রাজনীতিতে তার হঠাৎ উদয়। তিনি ২০১৮ সালে সুযোগ বুঝে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ঢুকে পড়েন। ডা. মুরাদ হাসানের নির্দেশে পরিচালিত মুকুল বাহিনীর প্রধান ক্যাডার হিসেবে এলাকায় পরিচিত তিনি।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি এলাকার চাঁদাবাজি, ইভটিজিংসহ নানা অপকর্মে জড়িত। তার জন্য এলাকার নারীরা রাস্তায় বের হতে ভয় পেতেন। তাছাড়া দুর্নীতির নিউজ করায় ২০২০ সালে মুকুল বাহিনীর প্রধান সমন্বয়ক মুকুলের নেতৃত্বে এক সাংবাদিককে বাসা থেকে উঠিয়ে নিয়ে আসেন এবং তাকে বিভিন্নভাবে লাঞ্ছিত করেন। একই বছর শিমলা বাজারের রাম স্টোর থেকে চাঁদা না পেয়ে দোকানের সত্ত্বাধিকারীকে মারধর করেন। মুরাদের ছত্রছায়ায় থাকার কারণে কেউ কিছু বলারও সাহস করতো না তাকে।
জানা যায়, মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে তিনি এমডি রানা সরকার নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ করেন। মুহূর্তেই লাইভটি ভাইরাল হয়ে যায়। মাত্র ২২ ঘণ্টার ব্যবধানে ওই ভিডিওতে লাইক পড়ে ১৫ হাজার, কমেন্ট পড়ে ৬ হাজার ৪০০, শেয়ার করেছেন ৭৪১ জন ও ভিডিওটি দেখেছেন প্রায় পৌনে দুই লাখ মানুষ। তবে বুধবার রাত থেকে ভিডিওটি তার ওয়ালে আর দেখা যাচ্ছে না।
লাইভে তিনি জানান, মুরাদ হাসান প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর তার আশীর্বাদপুষ্ট হয়েছেন আওয়ামী লীগের বহু নেতাকর্মী। অসংখ্য নতুন কর্মী বাগিয়ে নিয়েছেন বহু সুযোগ সুবিধা। তথ্য প্রতিমন্ত্রী বিভিন্ন সময় ভুল বক্তব্য দিতেন। কিন্তু সুবিধাভোগী তৈলবাজ নেতাকর্মীরা ভুল ধরিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে আরও উৎসাহ দিয়েছেন। ফলে ভুলভাল মন্তব্য করে বারবার সমালোচিত হয়েছেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমার নেতা এখন সব হারিয়েছে, তার এ দুঃসময়ে তার পাশে এখন আর কেউ নেই।
তবে তার এ কান্নাজড়িত ভিডিওটি দেখে সহমর্মিতার পরিবর্তে অনেকেই তাকে গালিগালাজ করেছেন, তেলবাজ বলেছেন।
এদিকে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি একেএম আশরাফুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, এমডি রানা হঠাৎ করেই ২০১৮ সালে স্থানীয় রাজনীতিতে যুক্ত হন। উপজেলা যুবলীগে তার কোনো পদবি নেই।
এ ব্যাপারে রনার সঙ্গে মুঠো ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। জানা যায়, এ ঘটনার পর থেকেই রীতিমতো গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন তিনি। তবে তার সন্ধান পাওয়ার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। তার সঙ্গে যোগাযোগের পর বিস্তারিত জানা যাবে।