সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের সুবাদে কলেজছাত্র মো. মামুন হোসেনকে (২২) বিয়ের মাত্র ৭ মাসের মাথায় আলোচনায় আসা সেই নাটোরের গুরুদাসপরের কলেজেশিক্ষিকা খায়রুন নাহারের (৪০) মৃত্যু নিয়ে এখনো যেন শেষ নেই আলোচনা-সমালোচনার। তবে খায়রুন নাহারের মৃ্ত্যুর প্রায় সপ্তাহ খানেক পর এবার সামনে এলো আরেক তথ্য।
জানা গেছে, ঘটনার দিন রাতে শেষবারের মতো ছেলে সালমান নাফিস বৃন্তের সঙ্গে কথা বলেছেন।। ছেলের সাথে ৪০ সেকেন্ডের কথোপকথনে তিনি ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়ার কথা জানান। বিষয়টি নিয়ে ছেলে তার সৎ বাবা মামুন হোসেনের (২২) সঙ্গে কথা বলে। তবে শেষ পর্যন্ত কাজ হয়নি।
বৃন্ত জানান,ঘটনার দিন রাত ১১টার আগে তিনি তার মাকে ফোন করেন। এ সময় মা জানান, তিনি দুই এমজি পাওয়ারের আটটি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়েছেন। মা এর বাইরে কথা বলতে পারেননি। এরপর সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মামুনকে ফোন দেন। এ সময় মামুন তাকে বলেন, খায়রুন দু-চারটি কথাবার্তার পর ঘুমের ট্যাবলেট খায়। মামুন বৃন্তাকে তার মায়ের সাথে কথা বলতে বলে। পরদিন সকালে মামুন তাকে ফোন করে আ/ত্ম/হন/নে/র কথা জানায়।
মা হারানো ছেলে মামুনের কথা মিথ্যা বলে দাবি করেছে। মূলত মামুন মোটরসাইকেল কেনাসহ সব কিছুর জন্য মায়ের কাছ থেকে টাকা নিতেন। এছাড়া মাকে সবসময় মানসিক চাপে রাখতেন। একটি মোটরসাইকেল কিনতে চাইলে মামুন বাধা দেয়। ওই বিষয়টি নিয়ে ওই রাতে মায়ের সঙ্গে মামুনের ঝগড়া হয়। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের দাবি জানান তিনি।
বৃন্ত জানান, তিনি রাজশাহী সিটি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের ছাত্র। তার ছোট ভাই অর্ক তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র।
নাটোর সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক পরিতোষ কুমার জানান, খায়রুনের ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের আরএমও সামিউল ইসলাম শান্তর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বোর্ড গঠন করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তার গ/লায় আ/ঘা/তে/র চিহ্ন ছাড়া শরীরে কোনো আ/ঘা/তের চিহ্ন ছিল না। রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃ/ত্যু/র সঠিক কারণ জানা যাবে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই এজে মিন্টু জানান, নিহতের চাচাতো ভাই সাবের উদ্দিন বাদী হয়ে একটি অপমৃ/ত্যু মা/মলা করেছেন। তবে ওই শিক্ষকের মৃত্যুর সঙ্গে মামুন জড়িত বলে দাবি করেছেন নিহতের স্বজনরা। ওই ভাড়া বাসায় নি/হতের সঙ্গে থাকতেন মামুন। খায়রুনের মৃ/ত্যুর সঙ্গে মামুন জড়িত থাকতে পারে এমন ধারণায় তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, তিনি আসামির রিমান্ড আবেদন করেননি। এমনকি /হ//ত্যা/র বিষয়ে কোনও কথা স্বীকার করেননি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার স্বপন জানান, মামুনের সঙ্গে খায়রুনের স্বাভাবিক সম্পর্ক ছিল বলে দাবি করেন মামুন। তবে খায়রুন কেন এ পথ বেঁছে নিলেন তা জানেন না মামুন। তিনি আদালতে বিষয়টি তুলে ধরে জামিন চাইলে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত রোববার সকালে নাটোর শহরের চারতলা একটি বাড়ি থেকে ঐ শিক্ষিকার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী মামুনকে গ্রেপ্তার পুলিশ। পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এটি আ/ত্মহ/ন/ন বলে প্রমানিত হলেও, মৃত্যুর পথ বেঁছে নেয়ার জন্য খাইরুনকে প্ররোচনা দেয়ায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় তাকে।