বাংলাদেশে অবস্থানরত জাপানী মা নাকানো এরিকো এবং ইমরান শরীফ দম্পতির দুই মেয়ের বিষয়টি নিয়ে আদালত থেকে রায় ঘোষণা করেছেন। এই রায়ে দুই মেয়েকে মায়ের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বড় মেয়ে ১১ বছর বয়সী জেসমিন মালিকা মায়ের সাথে জাপানে যেতে চাইলেও অপর মেয়ে ৯ বছর বয়সী নাকানো লায়লা লিনা মায়ের সাথে জাপানে যেতে রাজি নয়। সে তার বাবার কাছে থাকতে চান বলে জানিয়েছে। সে তার বাবাকে ভালোবাসে। সেজন্য তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে মায়ের সঙ্গে জাপানে যেতে চান না।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকার নিম্ন আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ কথা জানান ছোট মেয়ে লায়লা লিনা। তিনি বলেন, আমি আমার বাবাকে ভালোবাসি। আমি বাংলাদেশে থাকতে চাই। মায়ের কাছে যাবো না।
এ সময় বাবা ইমরান শরীফ বলেন, লায়লা লিনা আমার সঙ্গে থাকতে চায়। মায়ের কাছে যেতে চায় না। কিন্তু তার মা তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। কিন্তু সে যেতে রাজি নয়। তার এই কথায় হতাশ হয়েছেন মা।
এদিকে মা নাকানো এরিকো তার বড় মেয়ে নাকানো জেসমিন মালিকাকে (১১) নিয়ে আদালতে আসেন। ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমানের আদালতে আনা লায়লা লিনার হেফাজতের বিষয়ে শুনানি হবে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জানুয়ারি বিকেলে ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান বাবা ইমরান শরীফের করা মামলা খারিজ করে জাপানি বংশোদ্ভূত দুই সন্তানকে মায়ের হেফাজতে রাখার আদেশ দেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক উল্লেখ করেন, হেফাজত নির্ধারণের ক্ষেত্রে নাবালিকাদের সামগ্রিক মঙ্গলই প্রধান। শারীরিক, মানসিক ও পারিপার্শ্বিক তথা সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল বিষয় তাদের বাবা নাকি মায়ের কাছে নিশ্চিত হবে মামলাটি নিষ্পত্তিতে এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন যে, জাপানি পিতার নিকট দুই সন্তান থাকা মঙ্গলজনক হবে।
বিচারক আরও বলেন, দুই নাবালিকা সন্তানের শেষ আবাসস্থল জাপান। তাদের মা জাপানি ডাক্তার। তাই মায়ের হেফাজতে সন্তানদের শারীরিক ও মানসিকভাবে নিরাপদ থাকবে বলে মনে করছে আদালত।
তাদের দাম্পত্য জীবনে শৃংখলা ফিরিয়ে আনা এবং তারা এক হতে পারেন কিনা সে বিষয়টি নিয়ে আদালত চেষ্টা করলেও কোনো সফলতা আসেনি। তবে ঐ জাপানি মা তার বাংলাদেশে অবস্থান করা দুই মেয়েকে নিয়ে জাপানে ফিরে যেতে চান। আদালতের রায়ের পর তিনি গোপনে জাপানে তার বড় মেয়েকে সাথে নিয়ে যেতে গিয়ে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন পুলিশের বাঁধার মুখে পড়ে ফিরে আসেন।