সামগ্রিক অর্থে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন হলেও দেশের গ্রাম অঞ্চলের মানুষ সেটা থেকে বঞ্চিত। শহরের মানুষ যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে তার অর্ধেকেরও কম পেয়ে থাকে গ্রামের মানুষ। অথচ দেশের জন্য তাদেরই অবদান বেশি। ক্ষমতাসীন সরকার দেশের গ্রামের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহন করেছে এবং সেটির অব্যাহত রাখা হবে বলে মন্তব্য করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
গ্রামের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষকে অবহেলা করা হয় বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশনে ‘বাংলাদেশের যুব সমাজ ও এসডিজি : আজকে দাঁড়িয়ে, আগামীর ভাবনা’ শীর্ষক দিনব্যাপী সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা জানান।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহযোগিতায় এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য নাগরিক প্ল্যাটফর্ম এ সম্মেলনের আয়োজন করে। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলিয়ার।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, নাগরিক সমাজ আসলে কারা? যারা শহরে থাকেন? নাকি সারা দেশের মানুষ? আক্ষরিক অর্থে গ্রামে বসবাসকারী দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ অবহেলিত। তা ছাড়া শহুরে নাগরিক সমাজ যে সুশাসনের কথা বলে, গ্রামে গেলেই বদলে যায়।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, শহরের সুশাসন আর গ্রামের সুশাসন এক নয়। গ্রামের সুশাসনের জন্য তারা চায় খাবারের ভালো উৎস, পানি, ভালো রাস্তা, ভালো বাসস্থান। অন্যদিকে শহরের নাগরিক সমাজের সুশাসন বলতে বোঝান মানবাধিকার বা অন্য কিছু। গ্রামের মানুষের সু-শাসনের ধারণা ও শহরের মানুষের সু-শাসনের ধারণা কিন্তু এক নয়।
মন্ত্রী গ্রামের মানুষের চাহিদার কথা তুলে ধরে বলেন, গ্রামের মানুষ চায় একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড, একটি টিউবওয়েল, একটি টয়লেট। তারা হয়তো সুশাসন বুঝেন না। তবে তারা চান থানার একজন ভালো ওসি থাকুক, ইউনিয়নে একজন ভালো চেয়ারম্যান থাকুক, ইউনিয়নে একজন সৎ ইউপি সচিব থাকুক, ভূমি অফিসে একজন ভালো তহশিলদার থাকুক। শহরের নাগরিক সমাজের কাছে সুশাসন বলতে বোঝায় মানবাধিকার।
সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, সরকার গ্রাম ও শহরের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রী প্রথমে দারিদ্র্য দূরীকরণ, জনগণের খাদ্য নিশ্চিতকরণ ও রাস্তাঘাট নির্মাণে মনোযোগ দেন। গ্রামের মানুষদের প্রতি অবহেলা সরিয়ে তাদের হক ও পাওনা স্বীকার করার সময় হয়েছে। শুধু স্বীকার করা নয় তাদের চাহিদা বাস্তবায়ন করারও সময় হয়েছে। আর সে কারণেই মন্দের ভালো হিসেবে ন্যায়বিচার করা প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সম্ভব হয়েছে।
এ সময় তিনি সরকারের পক্ষ থেকে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ, শিক্ষার প্রসার ও রাস্তাঘাট নির্মাণের বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
প্রসঙ্গত, সরকার দেশের সকল শ্রেনীর মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ গ্রামের মানুষের প্রতি বিগত দিনে যে অবহেলা করা হতে সেটির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি রেখেছেন বলে মন্তব্য করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।