পাকিস্তানে সংবিধান অনুযায়ী নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত করা হয়েছে। দেশের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে নির্বাচন স্থগিত হওয়ায় দেশের রাজনৈতিক নেতা ও বিশ্লেষকরা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। খবর আল জাজিরার
৯ আগস্ট পাকিস্তানের সংসদ ভেঙে দেওয়ার পর সংবিধান অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
শেষ পর্যন্ত সেই আশ”ঙ্কাই সত্যি হল। গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, আগামী বছরের জানুয়ারির শেষে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আসিয়া রিয়াজ, স্বাধীন রাজনৈতিক থিঙ্ক ট্যাঙ্ক পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ লেজিসলেটিভ ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ট্রান্সপারেন্সি (পিলডাট) এর একজন সিনিয়র ব্যক্তিত্ব, শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) বলেছেন যে নির্বাচন কমিশনের ঘোষণাটি সঠিক দিকের একটি পদক্ষেপ কিন্তু প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাব ছিল।
তিনি বলেন, নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও তা ঘোষণা করা হয়নি। ফলে আবারও জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ পেছানোর আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, স্বচ্ছ নির্বাচন করা খুবই জরুরি। কারণ অনির্দিষ্টকালের জন্য নির্বাচন করা যাবে না।
পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে যে নির্বাচনী সীমানা নির্ধারণের কাজ ৩০ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে। এরপর ৫৪ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করা হবে।
নির্বাচন কমিশনের মতে, সংবিধানে বলা হয়েছে যে সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণের পর ৪ মাসের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক বনেজীর শাহ বলেন, নির্বাচন হবে বলে বলা হলেও নির্দিষ্ট কোনো তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে নির্বাচনের কাজ প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, কী কারণে নির্বাচন পেছানো হচ্ছে এবং তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে না সে বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।
গত মাসে পাকিস্তানের সংসদ ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করা হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হন আনোয়ার উল হক কাকার। এখন তিনিই একমাত্র স্বচ্ছ জাতীয় নির্বাচন উপহার দিতে পারেন।
এদিকে, পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কারাগারে রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত বছরের এপ্রিলে সংসদে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতাচ্যুত হন ইমরান খান। ৭০ বছর বয়সী এই নেতা এরপর আগাম নির্বাচনের জন্য দেশব্যাপী প্রচারণা শুরু করেন। পরে গত ৫ আগস্ট তাকে দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত করা হয়।
ইমরান খানকে যে মামলায় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তা থেকে মুক্তি পান। কিন্তু তখন তাকে স্নাইপার মামলার আসামি করা হয়। ফলে তার জেল থেকে মুক্তি বাধাগ্রস্ত হয়।