রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রাস্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দেশের সকল দলের সাথে সংলাপ শুরু করেছেন। তবে বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল এই সংলাপে অংশগ্রহন এখনও যায়নি। আগামি ফেব্রুয়ারী মাসের মাঝামাঝি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে, এই কারনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সংলাপে বসছেন রাস্ট্রপতি। এদিকে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এই সংলাপকে একটি নিছক ভেল্কিবাজি হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তবে দেশের রাজনীতিকে সুষ্ঠু এবং সঠিক পথে নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর ভুমিকা রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন মহান রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ। তিনি সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করেন।
তিনি এ বিষয়ে বলেন, তিনি বলেন, শুধুমাত্র দলগুলোর সদিচ্ছা প্রকাশ করলে হবে না। ঘরে বসে রাজনীতি না করে মাঠে নামার মাধ্যমে এদেশের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে পারলেই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।’ চলমান রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের চতুর্থ দিন ছিল শনিবার। আজ সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে খেলাফত মজলিস ও তরিকত ফেডারেশনের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপ্রধান এ ব্যাপারে সকল রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা কামনা করেন। সংলাপ শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এ তথ্য জানান।
আবেদীন বলেন, একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সংলাপের আজ চতুর্থ দিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (বিটিএফ) এবং খেলাফত মজলিসের সঙ্গে আলোচনায় বসেন রাষ্ট্রপতি।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে এ আলোচনায় অংশ নেন। খেলাফত মজলিস নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন, নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষ ও শক্তিশালীকরণ এবং নির্বাচনের পরিবেশ রক্ষাসহ পাঁচ দফা প্রস্তাব প্রস্তবনা দেন আবদুল হামিদের কাছে।
এর আগে বিকাল ৪টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বসেন সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর এমপির নেতৃত্বাধীন নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল।
তরিকত ফেডারেশন রাষ্ট্রপতির কাছে চার দফা প্রস্তাবনা দিয়েছে। প্রস্তাবনাগুলো হলো: বাংলাদেশ সংবিধানানুযায় নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য একটি সময়োপযোগী আইন প্রণয়ন করা, অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন যেখানে গনমাধ্যমের একজন প্রতিনিধিসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং ইসিতে যাতে মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী বা তাদের পরিবারবর্গের কাউকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া না হয়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন করার মাধ্যমে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন একটি সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা এবং সকল রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করাটাই হলো দলগুলোর সাথে সংলাপের প্রধান উদ্দেশ্য। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পর্যায়ক্রমে আলোচনার ভিত্তিতে একটি দক্ষ, শক্তিশালী ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি হামিদ। দেশের ইসি গঠনে সব রাজনৈতিক দলের সার্বিক সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।
২০ ডিসেম্বরের প্রথম দিনে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে সংলাপে বসেন রাষ্ট্রপতি হামিদ। এ পর্যন্ত মোট ছয়টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলো এই সংলাপে আসার জন্য আহবান জানিয়েছেন আ.লীগের বেশ কয়েকজন নেতা। দলগুলোর অংশগ্রহন করার মাধ্যমে একটি কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন করা সম্ভব এমনটি বলেন তারা। বিএনপি আপাতত সংলাপে যাচ্ছে এমনটিই ধারনা করা হচ্ছে। তবে আদৌ দলটি সংলাপে যাবে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এদিকে তথ্য মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি আপাতত সংলাপে না গেলেও এক সময় তারা ঠিকই সংলাপে যাবেন। এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
খবর বাসসের।