Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে কোন বিষয়কে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসাবে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র, জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে কোন বিষয়কে বড় প্রতিবন্ধকতা হিসাবে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র, জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

বাংলাদেশ সরকারের বিশেষ সংস্থা র‍্যাব এবং র‍্যাবের কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর থেকে বাংলাদেশ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন আরোপিত বিষয় বা বাংলাদেশ সম্পর্কে মন্তব্যের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্চে। সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বেশ কিছু মন্তব্য করা হয়েছে। তবে এই বিষয়টি ভালোভাবে দেখছেন না বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ডক্টর একে আব্দুল মোমেন। ফের যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিষয়ে দেয়া প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন তিনি।

গণতন্ত্র নিয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের ছবক দেওয়া বন্ধ করে কূটনীতিকরা শিষ্টাচার মেনে চলবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক চর্চায় দুর্বলতা থাকতে পারে, যুক্তরাষ্ট্রেও আছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য শুনতে চাওয়া ঔপনিবেশিক মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ বলেও মন্তব্য করেন মোমেন।

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন এক বছরেরও বেশি সময় বাকি থাকায় তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে আলোচনা। এর মধ্যে রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ঢাকায় অবস্থানরত কূটনীতিকদের আলোচনায়ও উঠে আসছে নির্বাচনের প্রসঙ্গ। ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।

আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে রাজনৈতিক সহিং’/সতাকে বড় বাধা হিসেবে বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র। রাজনৈতিক সংঘাত ছাড়াই আগামী জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করা বাংলাদেশের সমৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

ব্রুনাইয়ের সুলতানের বাংলাদেশ সফর নিয়ে মঙ্গলবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মোমেন নির্বাচন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের জবাব দেন। দেশে দেশে গণতান্ত্রিক প্রেক্ষাপট ভিন্ন হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সব দেশেই গণতন্ত্রের ভালো-মন্দ রয়েছে। ইট ইজ নট এ পারফেক্ট সিচুয়েশন। ইট ইজ এ ডাইনামিক প্রসেস, ইভলভিং প্রসেস। প্রচেষ্টার মাধ্যমে ডেমোক্রেসি পরিপক্ক হয়।

“আমাদের কিছু দুর্বলতা আছে, আমরা সেই দুর্বলতাগুলো শোধরানোর চেষ্টা করছি। আমাদের এমপ্যাসিস রয়েছে। তার মানে এই নয় যে তারা গনতন্ত্রে সেরা। তাদেরও নিজেদের দুর্বলতা আছে।”দীর্ঘ সময় যুক্তরাষ্ট্রে কাটানো মোমেন সে দেশে ভোট দেওয়ার হার কম থাকা, আলাবামায় ৭২ শতাংশ প্রার্থীর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া, উপনির্বাচনে ১-২% ভোট পড়া এবং কোথাও কোথাও পোলিং বুথ কম থাকার বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

তিনি বাংলাদেশি সাংবাদিকদের এসব বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে প্রশ্ন করার পরামর্শ দেন। পিটার হাসের বক্তব্যের উৎস সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিজে এসব বলেননি, সাংবাদিকরা তাকে ‘জোর’ করার পর তার বক্তব্য এসেছে।

“আপনারা ওকে জোর করে বলতে যান। সেই বেচারা বাধ্য হয়ে উত্তরগুলো দেয়।” মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষকতা করার সময় অনেক গণমাধ্যম বিভিন্ন বিষয়ে মতামত নিতে আসত। কিন্তু জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হওয়ার পর তারা কখনো স্থানীয় কোনো বিষয়ে মন্তব্যের জন্য তারা আর কখনও আসেনি।আ

“একজন রাষ্ট্রদূত হওয়ার পর, আমাকে আর কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়নি। হারিকেন স্যান্ডির সময় আমি ভেবেছিলাম, তারা আমাদের মতামত চাইবে, কারণ আমরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিশ্বনেতা। কিন্তু কেউ আসেনি।”

‘ঔপনিবেশিক মানসিকতার’ কারণে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের এমন প্রশ্ন করা হয়েছে বলে মনে করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। “আমাদের দুঃখ বাংলাদেশে, ঔপনিবেশিকতার কারণে আমরা বাইরের কিছু পছন্দ করি, তাই আমরা হাল ছেড়ে দিই। এই মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।”

সরকার অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সচেষ্ট রয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিত করার চেষ্টা করবো। আপনারা বিদেশিদের কাছে ধরণা না দিলেই ভালো।”

বিদেশি কূটনীতিকদের প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি যে কূটনীতিকরা আমাদের দেশে আছেন, তারা আচরণবিধি জানেন এবং তারা তাদের মতো আচরণ করবেন। “আমাদের তাদের পরামর্শ দেওয়ার দরকার নেই। তারা সম্মানিত মানুষ, তাদের কূটনৈতিক শিষ্টাচার এবং আচরণবিধি অনুসরণ করা উচিত।”

তবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে বজায় রাখতে কঠোর প্রশাসনের দরকার অপরিহার্য। সেদিক থেকে বাংলাদেশে বর্তমান সময়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো পর্যায়ে রয়েছে। উল্লেখ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে এবং সেটা কতটুকু বিবেচনাপ্রসূত সে বিষয়ে সন্দেহ রয়েছে, এমনটাই জানিয়েছে বিশ্লেষকেরা।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *