চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ‘’ধ’র্ষ’ণের চেষ্টার অভিযোগ’ দায়ের করেছেন নিজ বিভাগের মাস্টার্সের এক ছাত্রী। তবে অভিযোগগুলো মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন অভিযুক্ত অধ্যাপক।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে যৌন হয়রানি ও ধ’র্ষ’ণের চেষ্টার লিখিত অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী।
বিভাগের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে অনুষদের সামনে মানববন্ধন করেন। তবে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য অভিযোগকারীর সঙ্গে সাংবাদিকদের কথা বলতে দেননি তারা। তাছাড়া অভিযোগের তথ্য প্রমাণ করতে বললে যথারীতি সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান।
ভিসি বরাবর অভিযোগপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, মাস্টার্সের থিসিস শুরু হওয়ার পর থেকে সুপারভাইজারের দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ভুক্তভোগীকে অসংগত ও অনুপযুক্ত কথাবার্তা বলতেন, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে অতর্কিত ও জোরপূর্বক স্পর্শ করতেন।
গত ৬ জানুয়ারি ল্যাবে গায়ে খুব ঠান্ডা লাগছে বলে উক্ত শিক্ষক তাকে জোরপূর্বক জাপটে ধরেন এবং ভুক্তভোগী ছাড়াবার চেষ্টা করেন। তৎক্ষণাৎ আরেক ল্যাবমেট এসে পড়লে তিনি কোনোমতে সরে পড়েন। বাকি মেয়েরা মিলে সিদ্ধান্ত নেয় স্যারের ল্যাবে কেউ একা যাবে না এখন থেকে।
এরপর ১৩ জানুয়ারি দুপুর ১২টার দিকে আসামিরা ভিকটিমকে রাসায়নিক দ্রব্য দেওয়ার নাম করে ঘরে ডেকে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করে। অভিযোগপত্রে আরও দুই শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে বলা হয়, অভিযুক্তরা তাদের সহ আরও অনেক শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানি করেছে।
ভিকটিম ওই শিক্ষার্থী ও তার ল্যাবমেটদের রুমে তালাবদ্ধ করে এবং সব অভিযোগ গোপন করার জন্য চাপ দেয়। বোঝাপড়া না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের ল্যাব থেকে বের হতে না দেওয়ারও হুমকি দেন তিনি।
অভিযুক্ত অধ্যাপক বলেন, এ ঘটনা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। আমি জানি না কেন আমাকে এভাবে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। ৬ তারিখ যদি আমি তাকে জোরে জাপটে ধরে থাকি, সে তার বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে ৭ তারিখ নির্বাচনের দিন আমার বাসায় এসে নিজ হাতে রান্না-বান্না করে খাওয়া দাওয়া কেন করতে এসেছে?’
ভুক্তভোগী ছাত্রীর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুই বিভক্তি দেখা গেছে। একদল শিক্ষক অভিযোগ উত্থাপন করলেও অন্য দল তা অস্বীকার করে বলেছে, তারা চার থেকে পাঁচ বছর ধরে এই বিভাগে পড়ছে। স্যার কখনো এমন মনে করেননি। স্যার খুবই আন্তরিক মানুষ। গবেষণার কাজে আমরা একটু এদিক-ওদিক হলে তিনি আমাদের বকাঝকা করতেন। এর বেশি কখনো দেখিনি। স্যারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আমাদের বিচলিত করে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নুরুল আজিম শিকদার বলেন, অভিযোগপত্র পাওয়ার সাথে সাথে ভিসি সেটিকে অভিযোগ সেলে পাঠিয়েছেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
শিরীন আখতার ভিসি অধ্যাপক ড.শিরীন আখতার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। আগামীকাল মিটিং হবে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব।