বরিশালে বসবাসরত প্রবাসী পরিবারগুলোকে টার্গেট করে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দিনের যে কোনো সময় বাসাবাড়িতে গিয়ে বিদেশে থাকা স্বজনের বন্ধু, সহকর্মী পরিচয় দিয়ে প্রথমে কিছু সময়ের জন্য ডলার রাখার কথা বলা হয়। সেই ফাঁদে পা দেওয়ার পর সবকিছু লুটপাট ও চুরি করে নেয়। আর এ ধরনের ঘটনায় অধিকাংশ সুন্দরী নারী জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাতে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. আলী আশরাফ ভূইয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, প্রযুক্তির সহায়তায় রোববার রাতে নগরীর কাশিপুর এলাকা থেকে ফারজানা রেজা নেলী নামে এক নারীকে আটক করা হয়। ওই নারীর প্রতারণার কৌশল বোঝার উপায় নেই। ফারজানা রেজা নেলীর বিরুদ্ধে মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন থানায় দুটি মামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
এ দিকে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার সামনে বিক্ষোভ করছেন মা-মেয়ে। দুজনেই উচ্চ শিক্ষিত, সরকারি কলেজের শিক্ষক। বাসা শহরের বৈদ্যপাড়া এলাকায়। ওই মা ও মেয়ে জানান, সম্প্রতি সুদর্শনা এক নারী নিজেকে তাদের সৌদিতে থাকা স্বজনের পরিচিত দাবি করে বাসায় এসে প্রথমে ভাবজমান। পরে বিপদে পড়েছেন আকুতি করে সেই নারী কিছু বিদেশি টাকা-ডলার একদিনের জন্য তাদের আলমিরাতে রাখার অনুরোধ জানান। প্রথমে রাজি না হলেও পরে অনেক জোরাজুরিতে নিজেদের আলমিরাতে রাখেন ডলার। এ সময় সেই নারী আলমিরার চাবি রাখার স্থান দেখে কৌশলে লুট করে ১০ ভরি স্বর্ণালংকারসহ নগদ অর্থ।
বরিশাল কামারখালী হযরত আলী ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ফারহানা হক বলেন, তারা আমাদের বাসা থেকে ১০ ব্যাগ স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে গেছে। আমরা সব হারিয়ে এখন নি:স্ব।
বরিশালের বাকেরগঞ্জের সৈয়দ আফসার আলী ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক রায়হানা আরা বলেন, “যে চক্রটি আমাদের ঘরে চুরি করেছে তার উপযুক্ত শাস্তি চাই। আমরা আমাদের জিনিসপত্র ফেরত চাই।
এমন অভিনব প্রতারণার ফাঁদে পড়েন মেহেদী হাসান, মিজান মো. তারা বলেন, আমরা যা হারিয়েছি তা ফিরে পাব বলে আশা করছি। এছাড়া যারা এসব কাজের সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আলী আশরাফ ভূইয়া জানান, আটক ফারজানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ফৌজদারি মামলা রয়েছে। তদন্তের জন্য তাকে রিমান্ডে নেওয়া হবে। প্রবাসীদের পরিবার নিয়ে এমন একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে জানতে পেরে ব্যবস্থা নিয়েছি। এ চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
এসময় কোনো কথা না বলে আসামি ফারজানা ও তার স্বামী ব্যাংকার দাবিদার জামাল আহমেদ গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।