মসজিদে বক্তৃতায় সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে কথা বলে চাকরি হারিয়েছেন চাঁদপুরের এক ইমাম। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এ খবর ছড়িয়ে পড়ায় পোস্টারসহ তিন মন্তব্যকারীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শনিবার (৬ জুলাই) সরেজমিনে দেখা যায়, সমাজচ্যুত চার পরিবারের সদস্যরা অসহায় জীবন যাপন করছেন। সম্মুখীন হতে হচ্ছে নানা প্রতিবন্ধকতার। জানা গেছে, চাঁদপুরের মতলব উত্তর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. স্থানীয় মসজিদের ইমামকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ সাইফুদ্দিন বেপারী গত ২২ জুন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট লেখেন, ‘সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে কথা বললে ইমামের চাকরি চলে গেছে’।
আর তাতে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় আরও তিন পরিবারের সদস্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করায় মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসীর সম্মানহানি হয়েছে দাবি করে ২৯ জুন সন্ধ্যায় এক বৈঠকের মাধ্যমে ওই ৪ পরিবারকে সমাজচ্যুত করেন তারা।
মসজিদের ইমাম রহমত উল্লাহ জানান, ঈদের পর শুক্রবার তিনি মসজিদে সুদ ও ঘুষের বিরুদ্ধে প্রচার করলে মসজিদ কমিটির লোকজন ক্ষুব্ধ হয়। মসজিদের ইমাম আরও বলেন, ওই ইমামকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য রুহুল আমিন মিয়াজী ৪ পরিবারকে বহিষ্কারের বিষয়ে বলেন, সমাজের মুসল্লিদের অবমাননা করার জন্য এই শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তাদের মসজিদে আসা-যাওয়া এবং সমাজের অন্য সবার সাথে কথা বলাও নিষেধ।
ওই দিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পৌর কাউন্সিলর মো. সবুজ বেপারী। পরিবারগুলোকে সমাজচ্যুত করা হয়নি বলে দাবি করেন তিনি। সবুজ বেপারী বলেন, মুসল্লিদের অপমান করায় তাদের উপর একটা নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তবে মসজিদ কমিটির কাছে ক্ষমা চাইলে ঠিক হয়ে যাবে। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর চাঁদপুর সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, সমাজচ্যুত করার ক্ষমতা কারও নেই।
ঘটনাটি মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলেও মনে করেন তিনি। এ বিষয়ে মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি।