ঘোষণার পরও ডলারের দর বাজারভিত্তিক নয়। মুদ্রার সংকট সহনীয় পর্যায়ে না আসায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার রেট বাজারে ছাড়তে পারছে না। বরং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার ক্রলিং পেগ পদ্ধতি ব্যবহার করে ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণের কথা বলছেন। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নীতিগত সুদের হারও বাড়ানো হবে।
এই ঘোষণাগুলো আসছে মুদ্রানীতিতে। গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পর্ষদ সভায় খসড়াটির অনুমোদন দেওয়া হয়। আগামী ১৭ জানুয়ারি মুদ্রানীতি ঘোষণা হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, বিগত সরকারের সময়ে পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে না থাকায় অস্থিরতা ছিল। নতুন সরকারও দায়িত্ব নিয়ে কীভাবে মূল্যস্ফীতি কমানো যায় সে বিষয়ে তৎপর। তাই মূল্যস্ফীতি কমিয়ে সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে নীতিগত সুদের হার বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের (জানুয়ারি-জুন) মুদ্রানীতিতে এসব নির্দেশনা কার্যকর করা হবে। পলিসি রেট সহ ব্যাংক ঋণের সব ধরনের সুদের চুক্তি অব্যাহত থাকবে।
বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এ বছরের মুদ্রানীতির অন্যতম লক্ষ্য হবে। এ জন্য চলমান সব ধরনের নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আনা হবে। মুদ্রাস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গৃহীত সংকোচনমূলক ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অর্থনীতিবিদ সাদিক আহমেদ, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট রিসার্চের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক বিনায়ক সেন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান মাসুদা ইয়াসমিন।
সংশ্লিষ্টরা জানান, মুদ্রাস্ফীতি কমাতে ঋণের সুদের হার কিছুটা বাজারভিত্তিক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া নীতিমালায় সুদের হারও বেড়েছে। ঋণের সুদের হার ৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ১১ দশমিক ৮৯ শতাংশ হয়েছে। আসন্ন মুদ্রানীতিতেও সুদের হার বাড়ানো হবে। সুদের হার বৃদ্ধির কারণে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও সরকার কিছুটা রক্ষণশীল পথে হাঁটতে চায় বলে মনে করেন তারা।