Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Exclusive / সুখবর পেল মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা

সুখবর পেল মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশীরা

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিসহ প্রবাসী কর্মীরা তাদের চাকরি এবং আয় নিয়ে উদ্বেগের সম্মুখীন হয় যে সময় দেশটি বিশ্বব্যাপী চলমান পরিস্থিতির কারনে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। সেই সময় দেশটিতে প্রবাসী কর্মীরা বলেছেন যে, অনেক বিদেশী কর্মী হয় তাদের চাকরি হারিয়েছেন এবং অনেকের মজুরি হ্রাস পেয়েছে। অবশ্য দেশটিতে সেই সময় অনেক ব্যবসা বন্ধ বা আকার হ্রাসের মুখোমুখি হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা ও কুয়ালালামপুরের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয় যার ফলে তিন বছর পর বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি শুরু হয়েছে।

মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী এম সারাভানান এবং ইমরান আহমেদ যিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন তিনি কুয়ালালামপুরে নিজ নিজ পক্ষের পক্ষে বহুল প্রতীক্ষিত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। এখন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক পাঠাতে কোনো বাধা নেই বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এদিকে মালয়েশিয়ায় অবৈধ বাংলাদেশিসহ বিদেশি শ্রমিকদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সময়সীমা বাড়িয়েছে দেশটির সরকার। ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এ সুযোগ বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দেশটির অভিবাসন বিভাগের ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান ইমিগ্রেশন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক খায়রুল যাইমি দাউদ।

মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার জানান, লকডাউন আর বিভিন্ন জটিলতার কারণে অনেকেই এ রিক্যালিব্রেশন রিটার্নের আওতাভুক্ত হতে পারেননি। আমরা এ দেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সময়সীমা বাড়ানোর সুপারিশ করি।

তিনি বলেন, আমাদের সুপারিশ আমলে নিয়ে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ‘রিক্যালিব্রেশন রিটার্ন’ কর্মসূচির সময়সীমা বাড়িয়েছে মালয়েশীয় সরকার। গত কয়েকমাস থেকে মালয়েশিয়ায় অনিবন্ধিত বিদেশিদের ধড়পাকড় বেড়ে যায়। এতে অন্তত তিন শতাধিক বাংলাদেশি আটকের খবর পাওয়া যায়। তবে রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি মালয়েশিয়া সরকারের একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এর সঙ্গে বৈধকরণের কোনো সর্ম্পক নেই। বিভিন্ন অপরাধে বাংলাদেশিসহ অন্যদেশিরাও আটক হন। এর মধ্যে নিবন্ধন না থাকাও একটি অপরাধ।

চলমান রিক্যালিব্রেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে তারা ইমিগ্রেশনের অনুমতি ছাড়াই নিজ দেশে ফিরতে পারবেন। আর নিতে হবে না ইমিগ্রেশনের অ্যাপয়েন্টমেন্ট। অর্থাৎ অবৈধ অভিবাসীরা সরাসরি কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে গিয়ে ৫০০ রিঙ্গিত জরিমানা প্রদান করে নিজ দেশে চলে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে পাসপোর্ট বা ট্রাভেল পাস এবং ফ্লাইট টিকিট সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে। অবশ্যই করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট ফ্লাইটের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করতে হবে এবং ৬-৮ ঘণ্টা আগে বিমানবন্দরে যেতে হবে।

এদিকে মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগ জানায়, যারা রিক্যালিব্রেশন প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছেন না এবং যে কোম্পানির মালিক অবৈধ শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করাচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়ার ১৯৫৯/৬৩ অনুচ্ছেদের ৫৫ (বি) ধারা মোতাবেক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কোনো স্থানে যদি অবৈধ শ্রমিক পাওয়া যায় তাহলে মালিকপক্ষ ও কর্মচারীকে বড় অঙ্কের জরিমানাসহ এক বছরের জেল কার্যকর করা হবে। অন্য আরেকটি আইনে আছে, কোনো মালিকপক্ষ যদি পাঁচজনের বেশি অবৈধ শ্রমিক রাখে তাহলে পাঁচবছরের জেল কার্যকর হবে।

২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ‘রিক্যালিব্রেশন রিটার্ন’ কর্মসূচিতে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৯২ হাজার ২৮১ জন অবৈধ অভিবাসী নিজ দেশে স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়ার জন্য নিবন্ধিত হয়েছে। তারমধ্যে ৯৯ হাজার ৪৭ জন ইন্দোনেশিয়ান, ২৬ হাজার ৮২১ জন বাংলাদেশি, ২৩ হাজার ৮৪৪ জন ভারতীয়সহ মোট ১ লাখ ৬২ হাজার ৮২৭ জন দেশে ফিরে গেছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, এই মুহূর্তে মালয়েশিয়ার অভিবাসন চাপ সামলাতে অক্ষম। কেএলআইএ-তে অনথিভুক্ত অভিবাসীদের প্রক্রিয়া করার জন্য বিশটি কাউন্টার স্থাপন করা হলেও কাজ করছে মাত্র ১০টি। এতে প্রবাসিরা রয়েছেন চরম হতাশায়।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে, মালয়েশিয়া সরকার ঘোষণা করেছিল যে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর দেড় মিলিয়ন শ্রমিক নিবে। তবে নিয়োগের সিন্ডিকেটের কারণে মাত্র ১০টি এজেন্সি কর্মী পাঠানোর সুযোগ পেয়েছে। প্রতিটি অভিবাসী শ্রমিকের জন্য সর্বোচ্চ খরচ ৩৫,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও সিন্ডিকেট জনপ্রতি ৩০০,০০০-৪০০,০০০ টাকা নেয়। বায়রার সাবেক মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, বাজার টেকসই রাখতে সিন্ডিকেট ছাড়াও আইনি সংস্থার হস্তক্ষেপ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। উত্পাদন, নির্মাণ, পরিষেবা, প্ল্যান্টেশন এবং পণ্য খাতগুলি এখন সেখানে অনেকটা উন্মুক্ত, তবে তাদের ব্যবসাগুলি এখনও পুরোপুরি চালু হয়নি। সেখানে চলমান পরিস্থিতির কারনে সরকার বিদেশী কর্মীদের কিছু জায়গায় কাজ করতে নিষেধ করে, যার ফলে অনেক বাংলাদেশি বেকার হয়ে পড়ে।

About

Check Also

চুলের মুঠি ধরে নারী চিকিৎসককে রোগীর মারধর (ভিডিও সহ)

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসককে হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *