দীর্ঘদিন যাবৎ মালয়েশিয়ার বাংলাদেশের সাথে শ্রমবাজারের তেমন কোন যোগাযোগ ছিল না। অন্যান্য দেশের লোক নেওয়া হলেও বাংলাদেশের লোক মালয়েশিয়াতে নেওয়া হতো না। তারই পরিপ্রেক্ষিতে দু দেশের শ্রম উন্নয়ন যাতে আরো বেশি গভীর হয় এবং সম্পর্কটা যাতে আরো ভালো হয় সেই উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশের নতুন পদক্ষেপ। হয়ত এবার সেই দোয়ার খুলতে যাচ্ছে।
দীর্ঘদিন পর বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলতে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে দেশটির সরকারের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করতে শনিবার রাতেই মালয়েশিয়া যাচ্ছেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ।
শনিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ‘আজ রাতে আমি মালয়েশিয়া যাচ্ছি। আশা করছি, কাল (রোববার) সকালে এমওইউ সই হবে। এটা একটা বিরাট বাজার। এ বাজারটি নিয়ে অনেক গুজব রয়েছে। এসবে কান দেবেন না। সরকার কাজ করছে, আমরা বাজারটি ওপেন করতে চাই। মার্কেট খুলবে।’
তবে এই সমঝোতার মাধ্যমে সিন্ডিকেট ছাড়াই কর্মী পাঠাতে চান বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ।
শ্রমিক নেয়ার বিষয়ে ১০ ডিসেম্বর মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে শ্রমিক নেয়ার ব্যাপারে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে রাজি হয়েছে তাদের সরকার। চুক্তি স্বাক্ষরের পর পরই বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী সারাভানান।
শুক্রবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমদ জানান, আমরা‘কোনো সিন্ডিকেটের পক্ষপাতী না’। অতীতে মালয়েশিয়ার বাজার নিয়ে অনেক কিছু হয়েছে। আমি অতীতকে দূর করার চেষ্টা করছি। আমাদের সফল হওয়াটা নির্ভর করছে সমঝোতা স্বাক্ষরের ওপর।
এদিকে, মালয়েশিয়ায় বিএমইটির ডাটাব্যাংক থেকে কর্মী পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।
গত তিন বছর ধরে বাংলাদেশের জন্য মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ থাকার পর গত ১০ ডিসেম্বর (শুক্রবার) বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে অনুমোদন দেয় দেশটি। বাংলাদেশ থেকে সব পেশার বিশেষ করে গৃহকর্মী, বাগান, কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা, খনি ও খনন এবং নির্মাণ খাতে কর্মী নেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়।
চুক্তি অনুযায়ী যদি বাংলাদেশের শ্রমিকদেরকে মালয়েশিয়াতে নেওয়ার অনুমতি মেলে তাহলে সেটা আমাদের জন্য অনেক ভালো একটা খবর। কারণ আমাদের দেশের বেশিরভাগ ইনকাম রেমিটেন্স যোদ্ধাদের মাধ্যমে হয়ে থাকে। প্রচুর লোক প্রতিনিয়ত কাজের জন্য বিদেশ যাচ্ছে দেশ থেকে। এখানে যদি মালয়েশিয়ার মতো উন্নত দেশে যাওয়ার সুযোগ থাকে তাহলে কাজেও যেমন অগ্রগতি আসবে পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা ইনকামেও বাংলাদেশ আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।