ভালো আই এর উৎস খুঁজতে অনেক মানুষ পাড়ি জমায় ভিন্ন দেশে। কেউ কেউ সকল আইন মেনে বিদেশে পাড়ি জমায় আবার অনেকেই অবৈধপথে। ভিন্ন উপায়ে অবৈধ পথে বিদেশ যাত্রা করতে গিয়ে অকালে প্রাণ হারালেন তাপস নামের এক যুবক। সংবাদ সূত্রে জানা যায়, তার বাড়ি সুনামগঞ্জে।
স্বপ্নের দেশ ও উন্নত জীবনের আশায় গ্রিস থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে প্রচণ্ড গরমে প্রাণ হারান তিনি। তাপস জেলার ধর্মপাশা উপজেলার জয়শ্রী ইউনিয়নের বাগুচা গ্রামের মৃত সতীশ চন্দ্র সরকারের ছেলে।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিওতে তাপসের মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছে পরিবার। তার নির্মম মৃত্যু পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পরিবার জানায়, তাপস এসএসসি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। এরপর প্রায় আড়াই বছর আগে তিনি বিদেশে যান। গত ৭ আগস্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ছবি দেখে পরিবার তাপসের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাপস চাট জেলায় এক আত্মীয়ের মুদি দোকানে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। তিনি নগরীর মন্ডলীভোগ এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন। করোনা মহামারির ছয় মাস আগে বন্ধুদের সঙ্গে তুরস্ক হয়ে অবৈধভাবে গ্রিসে যান তিনি। সেখান থেকে গ্রিসে বসবাসরত এক বাংলাদেশি দালালের মাধ্যমে সার্বিয়া যাওয়ার চুক্তি করেন। পরে সার্বিয়া থেকে আরেক দালালের মাধ্যমে ইতালি যাবেন।
এই পথে দালালরা প্রথমে গ্রিসের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে আলবেনিয়ায় প্রবেশ করে। আলবেনিয়ায় দুই থেকে তিন দিন থাকার পর মন্টিনিগ্রো যাওয়ার সুযোগ নিন। দালালরা মন্টেনিগ্রোর সাথে চুক্তিবদ্ধ অর্থ সংগ্রহ করে। টাকা দিলে সার্বিয়া নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে স্লোভেনিয়া হয়ে ইতালি পৌঁছায়।
সেই চুক্তি অনুযায়ী তাপসসহ প্রায় ৩০ জনের একটি দল গত ৩ আগস্ট গ্রিস থেকে আলবেনিয়ায় পৌঁছায়। আলবেনিয়ার স্থলসীমান্ত থেকে প্রচণ্ড গরমে ৮ ঘণ্টা উঁচু পাহাড় পার হয়ে মন্টিনিগ্রোতে প্রবেশ করার পর তাপস হঠাৎ পাহাড়ে ধসে পড়ে। এ সময় তার মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে দালালসহ অন্যরা তাকে ফেলে চলে যায়। তার সাথে থাকা দুইজন পরিচিতজন অনেক চেষ্টা করেও তার কোন সাড়া না পেয়ে চলে গেল। তবে তারা ঘটনার ভিডিও তৈরি করে গ্রিসে তাদের স্বজনদের কাছে পাঠিয়েছে।
জয়শ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সঞ্জয় রায় চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে বলেন, খবর শুনেছি স্থানীয় এক ছেলে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছে।
তাদের কাফেলায় অনেক লোক থাকলেও এমন পরিস্থিতিতে তাকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়নি কেউ । ওই পরিস্থিতিতে সকলেই অনেক ক্লান্ত এবং পরিশ্রান্ত ছিলেন এবং সাবর মনের মধ্যে ছিল অবৈধ পথে ভিন্ন দেশে পাড়ি জমানোর ভয়। এই ঘটনায় এখনো প্রয়তের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে কিনা সে বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি ।