যতদূর জানা গেছে সীতাকুন্ডের জ্বলছিল বেশ সময় ধরে। সেখানে কন্টেইনারে থাকা হাইড্রজেন পার অক্সাইড খুবই হানিকর একটি তরল পদার্থ। এই পদার্থের তেজস্ক্রিয়তা অনেক বেশি হয়ে থাকে। যার কারণে আগুন লাগলে এর ব্যাপৃতি অনেক দূর পর্য হতে পারে। সম্প্রতি জানা গেল একটি সুখবর আর সেই সুখরটি দিলেন সেনাবাহীনি।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন পুরোপুরি নিভে না গেলেও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ৭১ ঘণ্টা পর তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। আগুন নেভাতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর কর্মীরা। তারা বলছেন, এই ডিপো থেকে বড় কোনো বিপদের আশঙ্কা নেই।
মঙ্গলবার (৭ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেল গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত রোববার সকাল থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের দুই শতাধিক সদস্য বিস্ফোরণস্থল ও হাসপাতালে কাজ করছেন। ডিপোতে পৌঁছে আমরা ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করার যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। সেখানে যে আগুন লেগেছে তা এখন প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আমাদের কিছুক্ষণ লেগেছে। কারণ এলাকাটা অনেক বড়। প্রায় ২৬ একর জায়গা জুড়ে ডিপো। এখানে কনটেইনারের সংখ্যা চার হাজারের বেশি। একের পর এক পাত্র লাগানো হয়েছে। পাত্রগুলো নামাতে সময় লাগে।
ওই সেনা কর্মকর্তা জানান, জ্বলন্ত কন্টেইনারের পাশে ভালো কিছু কন্টেইনার ছিল। আমরা তাদের আলাদা করে রেখেছি। যাতে আগুন ছড়িয়ে না পড়ে এবং কোনো ক্ষতি না হয়। আগুন প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। এখান থেকে আগুন ছড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেল উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যেকোনো দুর্যোগে জনগণের পাশে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আগুন লাগার পর রাসায়নিকের পাত্রে একের পর এক বিস্ফোরণ ঘটলে তা কেঁপে ওঠে বহুদূর। দাবানল ও ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রয়াতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯।
তবে জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী প্রয়াতের সংখ্যা ৪১। দগ্ধ ও আহত ১৭৩ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাতে শনাক্ত হওয়া হতাহতদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সীতাকুন্ডের অগ্নিকান্ডে স্বজন হারানোর কারণে দেশের অনেক পরিবারে চলছে শোকের মাতম। ফারার ফাইটারসহ এই অগ্নি কান্ডে প্রয়াত হয়েছেন প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ। চট্রগ্রামের সীতাকুন্ড যেন পরিণত হয়েছে প্রয়াতের বদ্ধভূমিতে। এই ধরণের ঘটনা বাংলাদেশের মানুষ আগে কখনো দেখেনি।