গত শনিবার রাতে সীতাকুণ্ড ডিপোতে বি/স্ফোরণে আ/গুন ধরে যায় ডিপোর চারপাশে। পরে আগুন নিভানোর জন্য ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা অভিযান চালানো শুরু করে। কিন্তু ডিপোতে কেমিক্যাল থাকাতে বার বার বি/স্ফোরণ ঘটলো আগুন নিয়ন্ত্রন করতে ব্যাপক চাপের মুখে পড়ে যায় ফায়ার ফাইটাররা। এই অভিযানে ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ অনেকে প্রাণ হারান।
মোঃ হানিফ, বয়স ৫০। চায়ের দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। বিএম কন্টেইনার ডিপোর দক্ষিণ-পূর্ব কোণে তার দোকান। শনিবার রাতে ডিপোতে বি/স্ফোরণের পর সবাই যখন দৌড়াচ্ছিল, তখন বাঁচার আকুতি নিয়ে নিরাপত্তা দেয়াল টপকাতে চাওয়া ৩০ শ্রমিককে একাই দেয়াল পার করেছেন তিনি।।
ঘটনার দিনের বর্ণনা করতে গিয়ে হানিফ বলেন, শপ্রতিদিনের মতো শনিবার রাতেও দোকানে করছিলেন। আচমকা বি/স্ফোরণের শব্দ। লোকজন ছুটতে শুরু করেছে। বিস্ফোরণে আহত শ্রমিকরা তার দোকান সংলগ্ন উচ্চ নিরাপত্তা প্রাচীর পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু পোড়া শরীর, ভাঙা অঙ্গ ও রক্তক্ষরণ শরীর নিয়ে পার হতে পারছিলেন না।
এমন অবস্থা দেখে নিজের বাড়ি না গিয়ে দোকানের চালায় উঠে পড়েন। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করা শুরু করেন। প্রথমে তিনি পাঁচজন শ্রমিককে নিয়ে আসেন। এরপর তার স্ত্রী নাসিমা বেগম তাকে খুঁজতে দোকানে আসেন। তারপর স্ত্রীকে দিয়ে বাড়ি থেকে একটি কাঠের সিঁড়ি নিয়ে আসেন। মই পাওয়ার পর আরও ২৫ শ্রমিককে উদ্ধার করে প্রাণে বাঁচান হানিফ। পরে আহতদের অ্যাম্বুলেন্সে করে বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হানিফ বলেন, এখনে দোকান থাকায় ডিপোতে কাজ করা বেশির ভাগ শ্রমিকই পরিচিত। তাদের বাঁচার আকুতি উপেক্ষা করতে পারেননি। তাই ভয়াবহ এমন পরিস্থিতিতে শুধু নিজে বাঁচার কথা না ভেবে শ্রমিকদের উদ্ধারে এগিয়ে যান।
হানিফ, চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ উপজেলার মুছাপুর এলাকার মৃ/ত নুরুল আহাদ এর ছেলে। ছোটবেলা থেকেই তিনি সোনাইছড়ি ইউনিয়নের লালবেগ এলাকায় বসবাস করছেন। আট সন্তানের বাবা হানিফ দুই বছর আগে বিএম ডিপোর পাশে চায়ের দোকান খোলেন।
প্রসঙ্গত, ডিপোর পাশের দোকানদার হানিফ মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে ৩০ জন মানুষের জীবন রক্ষা করেন। নিজের জীবনের চিন্তা না করে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে দুর্ঘনটায় কবলিত মানুষের পাশে দাড়ান তিনি।