আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয় সে লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটকেন্দ্রে কারচুপি ঠেকাতে নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রগুলোতে সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যেটা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একটি আশা দেখছিল এটা ভেবে যে নির্বাচনে কিছুটা হলেও কারচুপি বা জাল ভোট ঠেকবে। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলো নির্বাচন কমিশন।
ইচ্ছা থাকলেও আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব আসনে সিসি ক্যামেরা বসানো সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নানা সীমাবদ্ধতার কারণে আগামী নির্বাচনে তিন’শো আসনে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা অসম্ভব বলে মনে করছেন তারা। তবে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে সিসি ক্যামেরা রাখার কথা ভাবছে ইসি।
ঢাকায় গাইবান্ধার সব নির্বাচনী কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ, অনিয়মের কারণে অর্ধশত কেন্দ্র দুপুর পর্যন্ত ভোট বন্ধ, তারপর পুরো নির্বাচন বাতিল করা হয়। সিসি ক্যামেরার বদৌলতে এমন নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত নির্বাচন কমিশনের।
নির্বাচনী এলাকায় বিক্ষোভের পাশাপাশি উত্তাপ ছড়িয়েছে জাতীয় রাজনীতিতেও। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা পরিষদ নির্বাচনে সিইসিসহ পুরো কমিশন নির্বাচন ভবনে বসে পুরো ভোট পর্যবেক্ষণ করেন। ইসির পরিকল্পনায় স্থানীয় পর্যায়সহ আগামী যেকোনো নির্বাচনে তারা এ পথে হাঁটবে।
এমন বাস্তবতায় প্রশ্ন উঠেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা বসানোর বিষয়ে কমিশন কী ভাবছে। ইসি বলছে, আর্থিক সক্ষমতা, ক্যামেরা ব্যবহারের পরিধি বা জনবল বিবেচনায় ৩০০ আসনের সাড়ে চার হাজার কেন্দ্রের চার লাখ কক্ষে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব।
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান বলেন, এটা আমাদের কাছে অসম্ভব মনে হচ্ছে। জাতীয় পর্যায়ে সিসিটিভি পর্যবেক্ষণ কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। লক্ষ লক্ষ ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করা আমাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। অন্য কারিগরি সহায়তার মাধ্যমে মনিটরিং করে দোষীদের চিহ্নিত করা যাবে কি না এবং সেই মুহূর্তে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে কিনা সেটাও প্রশ্ন থেকে যায়।
সেক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ বা গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলো সিসি ক্যামেরা দিয়ে মনিটরিংয়ের কথা ভাবছেন তারা। আহসান হাবিব খান আরও বলেন, আমরা যদি সব করতে না পারি, তাহলে আমাদের কী করা উচিত হবে, আমাদের সেটা নিয়েও একটা চিন্তা আছে। ঝুঁকি কেন্দ্রে আমাদের প্রচেষ্টা ত্রুটিপূর্ণ হবে না। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছে নির্বাচন কমিশন।
গাইবান্ধা নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রগুলোতে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে মনিটরিং করেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ভোটকেন্দ্রে দুর্নীতি ঠেকাতে সিসি ক্যামেরা বসালেও সেখানে ভোটের ভিন্ন ঘটনা ঘটে, যেটা দেখে নির্বাচন কমিশন প্রায় অর্ধশত ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন স্থগিত করে দেয়। এমনকি নির্বাচন কমিশন শত শত মাইল দূর থেকে কিভাবে ভোট মনিটরিং করতে সক্ষম হচ্ছে সে বিষয়েও নিয়ে প্রশ্ন ওঠে