কয়েকদিন আগে এটিএম বুথের মধ্যে প্রাণনাশ করা হয় এক ব্যক্তিকে আর এই ঘটনাটি খুবই আলোড়ন সৃষ্টি করে। প্রাণনাশের ঘটনাটি ধরা পড়ে সিসিটিভি ফুটেজে। সেই ফুটেজে সবাই স্পষ্টতই দেখতে পারে যে প্রাণনাশকারী ঐ ব্যক্তিকে তার গলায় আঘাত করে। তবে সম্প্রতি ঐ প্রাণনাশের ব্যাপারে জানা গেল চাঞ্চল্যকর তথ্য।
রাজধানীর উত্তরায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথে এক ব্যবসায়ীকে ছুরিকাঘাতে প্রাণনাশের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। ১১ আগস্ট রাতে এ ঘটনায় আবদুস সামাদ (৩৮) নামে ডাকাতকে আটক করা হলেও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ধরা পড়ে একটি সিসিটিভি ফুটেজে।
পুলিশের আত্মবিশ্বাসী জবানবন্দি ও ডাকাতের স্বীকারোক্তি বলছে ব্যবসায়ী শরীফ উল্লাহ (৪৪) নিছক প্রাণনাশকারীদের ছাড়া আর কিছুই নয়। তবে প্রয়াতদের পরিবার বলছে, শরীফকে পরিকল্পিতভাবে প্রাণনাশ করা হয়েছে। ঘটনার পাশের ভবনের একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ ছবি।
দেখা যায়, ওই রাতে ১২:৪০ নাগাদ এটিএম বুথের সামনে একটি সাদা প্রাইভেট কার থামে। এরপর ব্যবসায়ী শরিফুল্লাহ গাড়ি থেকে নেমে বুথে প্রবেশ করেন। এর কিছুক্ষণ পর কথিত মুখোশধারী ডাকাত সেখানে নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কা দিয়ে বুথে প্রবেশ করে। আর সেই দৃশ্য দেখেছিলেন গাড়িতে অপেক্ষারত শরীফ উল্লাহর কয়েকজন বন্ধু। কয়েকজন বুথ ছেড়ে যাওয়া লোকটিকে তাড়া করে। এরপর দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ি থেকে এক যুবক নেমে বুথের গেটে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে মুমুর্শু শরীফ দেখতে পান। পরে তিনি স্বাভাবিক নিয়মে প্রাইভেটকারের দরজা বন্ধ করে গাড়ি নিয়ে চলে যান।
ঘটনার পর শরীফ উল্লাহকে উদ্ধার বা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা না করে গাড়িতে থাকা বন্ধুরা কেন চলে গেল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নিখোঁজ ওই বন্ধুদের পুলিশ থানায় আসতে বলার পর ফোন কেটে দেয়।
প্রয়াতের স্ত্রী জানান, ১০ দিন ধরে বাড়িতে টাকা ছিল। এমন নয় যে বুথ থেকে টাকা তুলতে হবে। ওই বুথ থেকে দুই মিনিট দূরে হাসপাতাল, তার বন্ধুরা তাকে বাঁচাবে? তার বন্ধুরা তাকে না বাঁচিয়ে চলে গেল?
পরিবারের অভিযোগ, এমন সিসিটিভি ফুটেজ দেখার পরেও পুলিশ তা আমলে নিচ্ছে না। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার আসল রহস্য উদঘাটন হবে।
উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ঘটনার পর আমরা প্রয়াত বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলেছি। এরপর থেকে তাদের ফোন বন্ধ রয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা কিছু বিষয় খতিয়ে দেখছি। এছাড়া এখন পর্যন্ত নতুন বা অন্য কোনো তথ্য আমাদের কাছে আসেনি। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি জানান, ডাকাতির উদ্দেশ্যে এ প্রাণনাশকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, প্রাণনাশকারীকে ঘটনাস্থলে থাকা লোকজন সঙ্গে সঙ্গে ধরে ফেলে এবং তাকে পুলিশের কাছে সপর্দ করে। ঐদিন দেখা যায় প্রয়াত লোকটি একটি সাদা রঙ্গের মাইক্রবাস থেকে নেমে এটেম বুথে টাকা তুলতে যায়। আরো জানা যায় যা ঐ গাড়ির মধ্যে প্রয়াত হওয়া ব্যক্তির বন্ধুরাও ছিল। তারা তাকে তখন আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিতে চায়নি। আর এই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।