এই গরমের দিনে বারবার বিদ্যুৎ বিচি ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। তবে সকাল থেকেই এই লোডশেডিংয়ের কারণ কী? সে বিষয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রীর কাছে সংবাদ মাধ্যমের প্রশ্ন: জবাবে তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন ইস্যুকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে, যার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে। গত রোববার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ তার ভেরিফায়েড মিডিয়া পেজে লোডশেডিং বৃদ্ধির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে সারাদেশে বিদ্যুৎ বিভ্রাট অব্যাহত রয়েছে; তবে ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলেও ব্যাক্ত করেন আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গ্যাস সংকটের প্রেক্ষাপটে বাড়ছে লোডশেডিং
সরকার দাবি করে আসছে যে বাংলাদেশে লোডশেডিং কমেছে, যা 100% বিদ্যুতায়নের পথে রয়েছে। সোমবারও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর পাওয়া গেছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত তিনটি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর পাওয়া গেছে। সরকারের ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারের মতে, সারা দেশে ১৪,০০০ মেগাওয়াটের চাহিদার বিপরীতে সোমবার সর্বোচ্চ ১২,৬১৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে চাহিদার তুলনায় প্রায় ৯ শতাংশ কম বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে, যা লোড ম্যানেজমেন্টের (লোডশেডিং) মাধ্যমে সমন্বয় করতে হচ্ছে।
পিডিবি চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, এটি মূলত গ্যাস সংকটের কারণে। গত দুই দিনে হঠাৎ করেই গ্যাস সরবরাহ অনেক কমে গেছে। এটা তখন আমাদের নজরে আসে। আজ থেকে গ্যাস সরবরাহ বাড়বে। আশা করছি, পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকবে। পিডিবি চেয়ারম্যান এমনটি আশা করলেও পেট্রোবাংলার মতে, রোববারের তুলনায় সোমবার বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাসের সরবরাহ কম হবে।
সোমবার দেশের তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন-পেট্রোবাংলার দৈনিক প্রতিবেদনে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে মাত্র ৪০ শতাংশ গ্যাস সরবরাহের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। সোমবার বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ২ হাজার ২৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা ছিল। কিন্তু এর বিপরীতে সরবরাহ করা যাবে ৯১৩ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। রোববার একই চাহিদার বিপরীতে গ্যাস সরবরাহের পূর্বাভাস ছিল ৯৬০ মিলিয়ন ঘনফুট। ওই দিন সর্বোচ্চ চাহিদা ১৪২৫০ মেগাওয়াট হলেও ন্যাশনাল লোড ডিসপ্যাচ সেন্টারে উৎপাদন ছিল ১২২৫২ মেগাওয়াট। বাকি ১৫০০ মেগাওয়াট বা ১২ দশমিক ৩৬ শতাংশ বিদ্যুত লোডশেডিংয়ের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে।
সংশ্লিষ্টদের দাবি শিগগিরই সমাধান হবে, তবে গ্যাস সংকটের কারণে এই সমস্যা আরও দীর্ঘদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। আন্তর্জাতিক গ্যাস ও গ্যাসের বাজারে সংকট থাকায় খুব দ্রুত তা সমাধান করা সম্ভব হবে না বলে ধারণা করছেন তারা। তবে বাংলাদেশ সরকার নিশ্চিত করেছে যত দ্রুত সম্ভব জ্বালানি সংকট সমাধানে আলোচনা চলছে। তবে আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জ্বালানি আমদানি করতে না পারলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে ধারনা করছেন বিশেষজ্ঞরা।