কয়েকদিন আগে খুলনায় বিএনপি গণসমাবেশের আয়োজন করে। আর এই গণসমাবেশে বিপুল সংখ্যক বিএনপি নেতাকর্মীদের উপস্থিতি দেখা যায়। এদিকে খুলনায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়াতে খুলনা আ.লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বসে থাকতে রাজি নন। লাগাতার কর্মসূচি এবং সেইসাথে পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে দলের সকল ধরনের সংগঠনগুলোতে সমন্বয় সভা, বর্ধিত সভা, বৃহৎ জনসভা আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
স্থানীয় শীর্ষ নেতারা বলছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ দলকে সুসংগঠিত করার প্রস্তুতি নিয়েছে, অন্যদিকে রাজপথ দখলে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। .
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা জানান, তৃণমূলকে সুসংগঠিত করতে ২ নভেম্বর সদর থানা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা, ৪ নভেম্বর দৌলতপুর থানা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা, ৫ নভেম্বর সোনাডাঙ্গা থানা, খালিশপুরে বর্ধিত সভা। ১১ নভেম্বর খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগ এবং ১২ নভেম্বর থানা আওয়ামী লীগের সভা অনুষ্ঠিত হবে। এসব বৈঠকে প্রধান দলের পাশাপাশি অঙ্গ সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও কৃষক লীগের সমন্বয় করা হবে। এ ছাড়া রাজপথে সংগঠনের সক্ষমতা দেখাতে ১ ডিসেম্বর শহীদ হাদিস পার্কে জনসভার আয়োজন করা হবে।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিএনপির জনসভায় নেতাদের দেওয়া বক্তব্যকে তারা ‘উ”/স্কানিমূলক’ ও ‘ধৃষ্ট”তা’ বলে মনে করছেন। এ ছাড়া গণসভায় অংশ নিতে গিয়ে ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙ”চুর ও আধুনিক রেলস্টেশন ভা”ঙচুরের ঘটনায় ক্ষু”ব্ধ তারা। এ কারণে পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে নামতে প্রস্তুত নেতাকর্মীরা।
এদিকে, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুজিত অধিকারী বলেন, বিএনপির সৃষ্ট পরিস্থিতির কারণে জনগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সেজন্য আওয়ামী লীগকে সাংগঠনিক পর্যায়ে সংগঠিত করাসহ কোনো দল যাতে স”ন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ইউনিয়ন-উপজেলা পর্যায়ে বর্ধিত সভার মাধ্যমে দলকে সংগঠিত করা হচ্ছে।
এ ছাড়া সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক বলেন, বিএনপি নেতাদের উ”স্কা/নি ও সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের রাজনৈতিক জবাব দেওয়া হবে। সেজন্য জনসভাসহ মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আগে রাজপথ আওয়ামী লীগের দখলে ছিল, এখন এই দল ক্ষমতায়। বিএনপি বিরোধী দল হিসেবে রাজপথে কিছু কর্মসূচি দিয়েছে। আমরাও সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি নিয়ে মাঠে রয়েছি এবং তাতে জনগণকে জড়ো করা হচ্ছে। ওয়ার্ড, থানা, মেট্রোপলিটন পর্যায়ের কমিটি সক্রিয় রয়েছে। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটিও রয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির পাশাপাশি দলকে শক্তিশালী রাখতে রাজপথ দখলে মাসব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হবে।
উল্লেখ্য, খুলনায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ব্যাপক শোডাউনের আয়োজন করতে যাচ্ছে, এমনটিই জানিয়েছে দলের একাধিক সূত্র। আওয়ামী লীগের সক্ষমতা জানান দিতে দলীয় পর্যায় থেকে বৃহৎ আকারের সমাবেশের পরিকল্পনা গ্রহণ করছে। এদিকে বিএনপি বিভাগীয় গণসমাবেশ সম্পন্ন করার পর বৃহৎ আন্দোলনে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। তাই আগামীতে রাজনীতির মাঠ অনেকটা উত্তপ্ত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।