কর্নেল (অব.) মো. আদালত শহীদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক সময়ের তুখোড় কর্মকর্তা ছিলেন। তবে তার নাম ছিল শুরু থেকেই নানা ধরনের অভিযোগ। আর উপর ভিত্তি করেই এবার জানা গেল নতুন খবর। দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) সম্পদের বিবরণী দাখিল না করার মামলায় কর্নেল (অব.) মো. আদালত শহীদ উদ্দিন খানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন।
আর মাত্র চার কার্যদিবসে শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাজিজুর রহমান এ রায় দেন। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদণ্ড দেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি পলাতক থাকায় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। দুদকের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন প্রসিকিউটর রফিকুল হক বেনু। তিনি মানবজমিনকে বলেন, সম্পদের বিবরণী দাখিল না করার জন্য কর্নেল (অব.) মো. আদালত শহীদ উদ্দিন খানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেন। মাত্র চার কার্যদিবসে শুনানি শেষে এ রায় দেন আদালত। গত ৮ আগস্ট অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলার শুনানি শুরু হয়। এরপর ২৩ আগস্ট ও ৭ সেপ্টেম্বর ২ কার্যদিবসে ৬ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত। এরপর মঙ্গলবার চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়।
এর আগে ২০২০ সালের ১০ই নভেম্বর অস্ত্র আইনের মামলায় কর্নেল শহীদ উদ্দিন খান, তার স্ত্রী মিসেস ফারজানা আনজুম খানসহ ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, রাজধানীর বারিধারায় শহীদ উদ্দিন খানের পরিবারের সদস্যদের নামে ১টি ফ্ল্যাট এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ২টি বাড়ি রয়েছে। যার মোট মূল্য কমবেশি ২৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের যুক্তরাজ্যে ১২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। স্ত্রী ও মেয়ের নামে ঢাকার প্রচ্ছয়া লিমিটেডের এক লাখ টাকা মূল্যের পাঁচ লাখ শেয়ার (মোট শেয়ার পাঁচ কোটি টাকা) এবং কুমিল্লার বন্দিশাহী কোল্ড স্টোরেজে কোটি কোটি টাকা মূল্যের শেয়ার রয়েছে। তাদের লন্ডনে জুমানা ইনভেস্টমেন্টস অ্যান্ড প্রপার্টিজ লিমিটেড নামে একটি ব্যবসা এবং সাইপ্রাসে একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তার বড় ভাই মোহাম্মদ আলী খানের নামে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ব্যাংকে ৩ লাখ ৩৯ হাজার দিরহাম জমা ছিল, যা জুমানা ইনভেস্টমেন্টস অ্যান্ড প্রপার্টিজ লিমিটেডে স্থানান্তর করা হয়।
২০২১ সালের জানুয়ারী মাসের ২৪ তারিখে তার বিরুদ্ধে করা হয় এই মামলা। আর সেই থেকেই চলছিল মামলাটির কার্যক্রম। মামলাটি করেছিলেন দুদকের উপ-পরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদ। মামলায় একই কর্মকর্তা তদন্ত করে গত বছর ১৪ই নভেম্বর চার্জশিট দাখিল করেন। আর মাত্র ৪ কার্য দিবসের মধ্যেই দেয়া হলো এই মামলার রায়।