Saturday , November 23 2024
Breaking News
Home / National / সাধারন সম্পাদক কথা বলতে নিষেধ করেছে,এটা কি শুরু করেছেন এনারা, কথা বলতে দিবে না আমাকে:পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সাধারন সম্পাদক কথা বলতে নিষেধ করেছে,এটা কি শুরু করেছেন এনারা, কথা বলতে দিবে না আমাকে:পররাষ্ট্রমন্ত্রী

১৮ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। খোদ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও মন্ত্রিসভার সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি। এ সময় তাকে ঘরের বাইরে কোণঠাসা অবস্থায় রাখা হয়। ঘটনার পর এই প্রথম মিডিয়ার মুখোমুখি হলেন তিনি। কিছু অকপট কথা বলেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. সৈয়দ বোরহান কবির, বাংলা ইনসাইডারের প্রধান সম্পাদক ড. এ কে আব্দুল মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ.কে. আব্দুল মোমেন বলেন, চিলি কান ধরেছে, কান দিয়ে আসলে কি হচ্ছে তাও দেখতে পায় না। আমার সহকর্মীরা আমাকে জিজ্ঞাসা না করেই আন্দাজে কথা বলে। আজকে বলে ভাই আমি সরি, আপনার সাথে কথা বলা উচিৎ ছিলো। আমি বললাম, বলেন নাই কেন? বলে আপনি তো আমাদেরকে জানান নাই। আমি বললাম ওকে। উনি বললেন একটু জানান, তাহলে আমাদের জন্যও সুবিধা। আজকে লিখিত বিবৃতি দিয়েছি।

সম্প্রতি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা না বলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে কথা বলিনি। কারণ আমাকে সবাই বলে কিছু বইলেন না। আমাদের সাধারণ সম্পাদক আপনাকে কথা না বলার পরামর্শ দিয়েছেন। তখন আমার চারপাশের সবাই বলছে কিছু বলো না। তারা কি এটা শুরু করেছে? তারা আমাকে কথা বলতে দেবে না, এটা আশ্চর্যের বিষয়। আমার দুই সহকর্মী আজ আবার আমার কাছে অভিযোগ করেছে। তিনি বললেন, আপনি আমাদের জানাননি। আমি বললাম, আমি বলার আগেই তুমি বলেছ। তুমি আমাকে জিজ্ঞেসও করোনি। তিনি বলেন, বললো, আমরা সরি।। আপনি একটু আমাদের লিখে দেন কি ঘটনা হয়েছিলো।

ভারতের ইস্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমি বললাম, জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠান। আমরা সেখানে সম্প্রীতির কথা বলছি। কোনো নির্বাচন নিয়ে নয়, ভারতেও কোনো নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা হয়নি। সন্ত্রাস ও উগ্রবাদ না থাকলে উন্নয়ন হবে কী করে? আমি সেখানে আসামের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে শুরু করেছি। যেটা আপনার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন। তোমার দেশে কিছু উগ্র লোক আছে, দুষ্টু লোক আছে, আমার দেশেও আছে। আমরা যদি এই বিষয়ে একমত হই, তাহলে আমরা কখনই তাদের স্ফীত করব না এবং নিরুৎসাহিত করব না। তাহলে স্থিতিশীলতা থাকবে, সম্প্রীতি থাকবে। আর শেখ হাসিনা সম্প্রীতি, স্থিতিশীলতার প্রতীক। আমরা যেভাবে পারি তাকে সাহায্য করব।

তিনি আরও বলেন, নেত্রী সেখানে বক্তব্য দেন। আমি বললাম নেত্রী ভাষণ দিয়েছেন, আমার কোনো বক্তৃতা লাগবে না। বলেন, আমাদের কিছু প্রশ্ন আছে, সেগুলোর উত্তর দিয়েছেন। আমি বললাম ঠিক আছে। তারপর ভারতে যা আলোচনা হয়েছে তা বলতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমি বলেছিলাম যে এখানে মুখ্যমন্ত্রীর ইস্যু দিয়ে শুরু হয়। ইদানীং বিভিন্ন জায়গায় যথেষ্ট স্থিতিশীলতা রয়েছে। আমাদের দুই দেশের মধ্যে আরেকটি সম্প্রতি। । আপনার ওখানে কি এক মহিলা একটা কি বক্তব্য দিয়েছে, তখন আমাদের এখানে খুব প্রেসার ছিল আমরা একটা বক্তব্য দিবো। আমরা দেইনি, চুপ করে রইলাম। কারণ কথা বলে লাভ নেই। আমি তখন মিডিয়াকে বলেছিলাম, রাসুল বলেছেন ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করার দরকার নেই। কিন্তু তখন আমার অনেক চাপ ছিল যে আমরা এর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেব। কিন্তু আমি দেইনি। কারণ, আপনার এখানে গণ্ডগোল হয়, আমার ওখানেও গণ্ডগোল হয়। আমার ওখানে গণ্ডগোল হলে আপনার এখানেও গণ্ডগোল হয়। কারণ, আমরা আইসোলেটেড আইল্যান্ড (isolated island) না। আমরা এমন জায়গায় থাকি যে এখানে কিছু হলে ওখানে কি প্রতিক্রিয়া হয়। উনি সমর্থন করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি বলেছি, আপনি দেখেন শেখ হাসিনা একজন স্থিতিশীল ব্যক্তি। তিনি স্থিতিশীলতার প্রতীক। তাকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। কারণ, তিনি একজন অসাম্প্রদায়িক ব্যক্তি। এটা আমাদের গর্ব। অবশ্য তখন বঙ্গবন্ধুর কথাও বলেছি। বঙ্গবন্ধু সারা জীবন অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলেছেন। এবং আমি যেমন বলেছি, কিছু ছোটখাটো কিন্তু বিব্রতকর বিষয় আছে। যেমন সীমান্তে নিহত। আপনি তাদের সমাধান করুন, এই বিষয়ে আপনার যা করা দরকার আমরা খুশি হব।

সহকর্মীদের অবস্থান সম্পর্কে। এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমি অবাক হয়েছি। আজ বলে যে তুমি বলোনি। তারা আমাকে জিজ্ঞেসও করেনি। জিজ্ঞেস না করেই তিনি এ বক্তব্য দিয়েছেন। আজ বলে তুমি বলোনি। তারপর আমি তাদের কাছে একটি ছোট নোট লিখেছিলাম।

আবদুর রহমান বলেন, আপনি আওয়ামী লীগের সদস্য নন। আওয়ামী লীগের সদস্য না হলে মনোনয়ন পেলেন কী করে, এমন মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন যা বলতে চেয়েছেন তা প্রেসিডিয়ামও নয়, কেন্দ্রীয় কমিটিও নয়। তিনি সংশোধন করেছেন।

‘বেহেশেতে’ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাকে বলা হয়েছিল আমাদের অর্থনীতি খুবই খারাপ। আমি বললাম, শুনেছ আমাদের অর্থনীতি খুব ভালো। বিশ্বের সর্বত্রই পণ্যের দাম বাড়ছে। আমাদের মুদ্রাস্ফীতি প্রায় ৭ শতাংশ, এবং আমেরিকাতে এটি ৯.১ শতাংশ, যেখানে এটি ২-৩ শতাংশের বেশি বাড়ে না। ইংল্যান্ডও অনেক বেড়েছে। তুরস্কের মতো বৃহৎ অর্থনীতি বেড়েছে ৬৭ শতাংশ, পাকিস্তান বেড়েছে ৩৭ শতাংশ। আর গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী শ্রীলঙ্কায় দেড়শ শতাংশের বেশি। তাহলে দেখুন তাদের কঠিন অবস্থা কি। আমরা তাদের থেকে অনেক ভালো। আফগানিস্তানে মানুষ মসজিদে গেলে খুন হয়, আমেরিকায় স্কুলে গেলে মেরে ফেলা হয়। সেদিক থেকে আমরা তাদের চেয়ে অনেক ভালো, বলতে পারেন আমরা ‘স্বর্গে’ আছি। আমরা সবসময় ‘স্বর্গ’ শব্দটি ব্যবহার করি। এখন সব কিছু একপাশে রেখে মোমেন সাহেব বলছেন, আমি ‘স্বর্গে’ আছি।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেটের বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে। এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, প্রথম দিন মিশেল এসে আমাদের সঙ্গে দেখা করেন। আমরা একটি নাগরিক দল নিয়ে এসেছি। কিন্তু আমাদের ফরম্যাট খুবই খারাপ। আমি তাকে (মিশেল) উপরে রাখছি, এবং আমাদের সরকারী কর্মচারীরা বড় বিবৃতি দিয়েছে। কিন্তু তাদের সিস্টেম ইন্টারেক্টিভ। সবাই গোল টেবিলে বসে আছে। এবং ইতিমধ্যে তিনি একটি ধারণা সঙ্গে এসেছেন. আমরা কথা বলার সময় খারাপ কিছু বলা হয়নি। কিন্তু সেখানে গিয়ে তারা সংবাদ সম্মেলন করেন। আমি আমার সাথে কথা বলার জন্য একটি প্রেস কনফারেন্স চেয়েছিলাম। কিন্তু আমার মন্ত্রণালয়ের লোকজন বলল, স্যার এটা ঠিক হবে না। কিন্তু সংবাদ সম্মেলন তিনি ঠিকই করেছেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিশেল ব্যাচেলেট যে নিরপেক্ষ কমিশনের কথা বলেছেন, তা নিয়ে আপনি ভাবছেন কিনা। এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমি এ বিষয়ে কথা বলিনি। আমার ব্যক্তিগত মতামত আমাদের দেশে কমিশন আছে। তারা সক্রিয়। তাদের নিজস্ব কর্তৃত্ব আছে, সরকারে নয়। আমাদের দেশের সংজ্ঞা অনুযায়ী, আমাদের আইনে ফোর্স ল্যাপস শব্দটি নেই। কোন আইন নেই। তারা ল্যাটিন আমেরিকা, অন্যান্য দেশে আছে. মিশেল ব্যাচেলেটের বাবা ফোর্স ডিসরাপশনে নিহত হন। তাই এই অভিজ্ঞতা তার নিজেরও আছে।

সর্বশেষ কথা পররাষ্ট্রমন্ত্রী কথা বলেন আয়নাঘর নিয়ে। তিনি বলেন আয়নাঘর নিয়ে তিনি কিছুই জানেন না। বিশেষ করে সুইডেন ভিত্তিক নেত্র নিউজ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমি সুইডেনকে জিজ্ঞাসা করেছি এ নিয়ে। তারা বলেছে এটা তাদের পত্রিকা না। তারা জানে না এ বিষয়ে। এটাতে যুক্তরাষ্ট্রের এনডিআই ফান্ডিং করে। তারা আমাদের ওখানে থাকে। ইংরেজিতে ডেভিড বার্গম্যান এবং বাংলায় তাসনিম খলিল। তাদেরকে যে কে তথ্য দেয় আমি বলতে পারবো না। তারা একেক সময় একেকটা আজগুবি বের করে। বের করে এটাকে ফলাও করে। কে প্রমোট করছে? নেত্র নিউজের এই আয়নাঘরের নিউজগুলো ভয়েস অব আমেরিকা, এরা প্রমোট করে। সুতরাং বিদেশে অবশ্যই কিছু হচ্ছে।

About Rasel Khalifa

Check Also

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেন্টমার্টিন লিজ দেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকার সেন্টমার্টিন দ্বীপকে লিজ দিচ্ছে। তবে প্রধান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *