কিংবদন্তি রবীন্দ্র সুরকার সাদি মোহাম্মদ আর নেই। বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
সাদি মোহাম্মদের ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী মোহাম্মদ দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, বুধবার তিনি তানপুরা নিয়ে গানের চর্চা করছিলেন। সন্ধ্যার পর হঠাৎ ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পান। পরে কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে তার ঝুলন্ত লা/শ উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক ভূঁইয়া দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শিল্পী সাদি মোহাম্মদের মৃ/ত্যু আত্মহত্যার কারণে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তারা। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই তার মৃ/ত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
ময়নাতদন্তের জন্য সাদি মোহাম্মদের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা হয়েছে বলে মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান। তিনি প্রথম দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নূরজাহান রোডের বাড়ির তৃতীয় তলায় দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ দেখতে পায়।
সাদি মোহাম্মদের জন্ম ৪ অক্টোবর, ১৯৫৭। বাবা সলিমুল্লাহ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হন। ঢাকার মোহাম্মদপুরের সলিমুল্লাহ রোড তার বাবার নামে।
গত বছরের ৮ জুলাই সাদি মুহাম্মদের মা জেবুন্নেশা সলিমুল্লাহ (৯৬) বার্ধক্যজনিত কারণে মা/রা যান। শিল্পী সাদি মোহাম্মদ তার মা মা/রা যাওয়ার পর বিষণ্নতায় ভুগছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিল্পীর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রথম দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, মা হারানোর বেদনা ভুলতে পারেননি সাদি মোহাম্মদ। সন্ধ্যার পরপরই, তিনি নীরবে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
সাদি মোহাম্মদ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রবীন্দ্র সঙ্গীতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বিশ্বভারতীতে শান্তিদেব ঘোষ এবং কণিকা ব্যানার্জির কাছে গান শিখেছিলেন।
২০০৭ সালে, সাদি মোহাম্মদ ‘আমাকে সিকপাবে ভোরের শিসেরে’ অ্যালবামের মাধ্যমে সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তার অ্যালবাম ‘সার্থক জনম আমার’ এবং ২০১২ সালে তার অ্যালবাম ‘সার্থক জনম আমার’ প্রকাশিত হয়। তার কণ্ঠে রবীন্দ্রসঙ্গীতের অনেক অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে। আধুনিক গানও গেয়েছেন।
সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। ২০১২ সালে, তাকে চ্যানেল আই দ্বারা আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। ২০১৫ সালে বাংলা একাডেমি থেকে রবীন্দ্র পুরস্কার পান।