নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁওয়ে অবস্থিত রয়েল রিসোর্টে ৮০০০ টাকার একটি বিশেষ প্যাকেজের সুবিধা নিয়ে ঝর্ণাকে নিয়ে রিসোর্টিতে ওঠেন মামুনুল হক। তিনি রিসোর্টে ওঠার সময় সেখানে একটি সাদা প্রাইভেট কার চালিয়ে হাজির হন এবং সেই সময় তার সাথে একজন মহিলা ছিলেন। নারীর সাথে গর্হিত কাজ করার মামলার সাক্ষী রয়্যাল রিসোর্টের সুপারভাইজার আ. আজিজ পলাশ সাক্ষ্য দেওয়ার সময় এমনটি উল্লেখ করেন।
গতকাল (সোমবার) অর্থাৎ ১৩ ডিসেম্বর দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট হতে দুপুর ২টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শি’/শু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন ঐ রিসোর্টের ম্যানেজারসহ আরো ৩ জন। ওইদিন ঘটনার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষ্য দেন রিসোর্টের ব্যবস্থাপক নাজমুল হাসান অনি, সুপারভাইজার আ. আজিজ পলাশ ও নিরাপত্তাকর্মী আনসার সদস্য রতন বড়াল।
আদালত সূত্র আরও জানায়, রিসোর্টের সুপার ফাইজার আ. আজিজ পলাশের সাক্ষীতে উল্লেখ করা হয়- মামুনুল হক নিজেই সাদা কালারের প্রাইভেটকার চালিয়ে রিসোর্টে একজন মহিলা নিয়ে আসেন। এরপর একদিনের জন্য রিসোর্টের আট হাজার টাকার বিশেষ প্যাকেজ গ্রহণ করে বিকাশে টাকা প্রদান করেন। এরপর তাকে নিয়ে নানা ঝামেলার পর পুলিশ গিয়ে তাদের অবস্থান নেওয়া রুম থেকে সাদা চাদর, মাথার চুলসহ ১৭টি আলামত জব্দ করেন।
রিসোর্টের নিরাপত্তাকর্মী আনসার সদস্য রতন বড়ালের সাক্ষীতে উল্লেখ করা হয়- সেদিন আনসার সদস্য রতন ও ইসমাইল এবং ৩ জন সিকিউরিটি গার্ডসহ গেটে ৫ জন দায়িত্ব পালন করছিলেন। বিকাল ৩টার দিকে একটি গাড়ি চালিয়ে মামুনুল হক রিসোর্টে আসেন। তাকে জিজ্ঞেস করলে তিনি ভেতরে যাবেন বললে গেট খুলে দেওয়া হয়।
শুনানিতে বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর রকিবুজ্জামান রাকিব। তাকে সহযোগিতায় ছিলেন নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহসীন, হাসান ফেরদৌস জুয়েলসহ কয়েকজন। অপরদিকে আসা’মিপক্ষে ছিলেন আনিসুর রহমান মোল্লাসহ কয়েকজন। এর আগের ধার্য দিনে মামলার বাদী প্রথম সাক্ষী দিয়েছেন।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি রকিবুজ্জামান জানান, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মামুনুল হককে আদালতে হাজির করা হয়। এদিন ৩ জন সাক্ষী দিয়েছেন। পরবর্তী সাক্ষী গ্রহণের দিন পর জানানো হবে। বিকাল ২টায় সাক্ষ্য শেষে মামুনুল হককে ফের কাশিমপুর কারাগারে নেওয়া হয়েছে।
রকিবুজ্জামান রাকিব যিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা নারী ও শি’শু নির্যাতন দমন আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি জানান, কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে সোনারগাঁও থানায় গর্হিত কাজ করার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন ৪ জন। উভয় পক্ষের সাক্ষীকে জেরা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গেল ৩০ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে রয়েল রিসোর্টে মামুনুল হক এক নারীকে নিয়ে ওঠেন এরপর তিনি বিপাকে পড়ে যান। এ সময় সেখানে হাজির হন স্থানীয় আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী যারা মামুনুল হককে ঘিরে ফেলে। পরবর্তীতে সেখানে হাজির হন স্থানীয় হেফাজত কর্মী-সমর্থকরা যারা সেই সময় এই ঘটনার জেরে রিসোর্ট ভাংচুর করে এবং মামুনুল হককে তাদের কাছ থেকে তাদের হেফাজতে নিয়ে নেয়।