মাত্র সাত সপ্তাহের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন। ড. ইউনূস বলেন, আমাদের অনুরোধে সাড়া দিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বাংলাদেশের গণআন্দোলনকালে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে বিস্তৃত অনুসন্ধান এবং এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পরামর্শ প্রদানের জন্য একটি ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন গঠন এবং তার কাজ শুরু করার জন্য দ্রুত বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের দুই সপ্তাহের মধ্যে আমরা গুম প্রতিরোধ আন্তর্জাতিক কনভেনশনে যোগ দিয়েছি। এর আশু বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় দেশীয় আইন ও বিধি প্রণয়ন বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বাংলাদেশে গত দেড় দশক ধরে গুমের ঘটনা তদন্তে একটি তদন্ত কমিশন বর্তমানে কাজ করছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মানুষের আস্থা ও আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে এবং নির্মম অতীত যেন আর ফিরে না আসে, সেজন্য আমরা কিছু সুনির্দিষ্ট খাতে সংস্কারকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। সেই লক্ষ্যে বিদ্যমান নির্বাচন ব্যবস্থা, সংবিধান, বিচার ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা সংস্কারে স্বাধীন কমিশন গঠন করেছি। সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের সংস্কারের জন্যও পৃথক কমিশনসহ আরও কয়েকটি বিষয়ে কমিশন গঠন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে আমরা ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে ব্যাপক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। কোনো বিদেশি ব্যবসা বা বিনিয়োগ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়েও আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই সংস্কারগুলো যাতে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই হয় এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে আমরা কাজ করছি। ড. ইউনূস বলেন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, সাম্য ও সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে একটি ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক গণতান্ত্রিক সমাজ হিসেবে আত্মপ্রকাশের অভিপ্রায় বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতা প্রসারিত করার জন্য আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।