সিলেটের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য দেওয়ান সাকিব আহমেদ ও আইন বিভাগের প্রভাষক রেজাউল করিমকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ করার নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
মঙ্গলবার শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারসহ ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক ড. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। সাকিব ও রেজাউলকে প্রাণনাশের হুমকি ও কটূক্তির অভিযোগ করেছেন নেতৃস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলা।
রোববার রাতে দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন উপাচার্য। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানের কাছেও তিনি পৃথক অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ পাওয়ার পর ইউজিসি ওই দুই অভিযুক্তের ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
লিডিং ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রারকে দেওয়া ইউজিসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্যের কাছ থেকে কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবর প্রাপ্ত চিঠিতে জানা যায়, গত ২১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য দেওয়ান সাকিব আহমদ ও আইন বিভাগের প্রভাষক রেজাউল করিম কর্তৃক উপাচার্য পদ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের জন্য বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক কাজী আজিজুল মাওলাকে শারীরিক লাঞ্ছনা ও জীবননাশের হুমকি প্রদান করা হয়েছে, যা অত্যন্ত অবমাননাকর, অনভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য। উপরন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কমিশনের ১২ নভেম্বর ২০২৩ তারিখের ১৫৪১ ও ১৫৪২ নম্বর স্মারকের পত্রের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
ইউজিসির চিঠিতে আরও বলা হয়েছে যে শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক একাডেমিক, প্রশাসনিক এবং আর্থিক বিষয়ে তদন্ত/মতামত প্রদানের উদ্দেশ্যে কমিশন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির পরিধিতে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এমতাবস্থায় লিডিং ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য দেওয়ান সাকিব আহমাদ ও আইন বিভাগের প্রভাষক রেজাউল করিমকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
পাশাপাশি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০-এর ৩৫(৭) ধারা অনুযায়ী কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনকে ব্যাখ্যা দিতে রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ইউজিসিতে দেওয়া অভিযোগে উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলা উল্লেখ করেন, রবিবার বিকাল ৫টার দিকে উপাচার্যের কক্ষে লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য দেওয়ান সাকিব আহমেদ ও আইন বিভাগের প্রভাষক রেজাউল করিম প্রবেশ করে উপাচার্যকে গালাগাল করেন এবং প্রাণনাশের হুমকি দেন।
নিজের অভিযোগে উপাচার্য উল্লেখ করেন, প্রভাষক রেজাউল করিম উপাচার্যের টেবিলে রাখা সিরামিকের মগ সজোরে তার দিকে ছুড়ে মারলে সেটা হাতে এসে আঘাত করে। এ সময় তারা উপাচার্যের দায়িত্ব থেকে স্বেচ্ছায় ইস্তফা না নিলে ‘ক্যাম্পাস থেকে লাশ বের হবে’ বলে হুমকি দেন।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে লিডিং ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য দেওয়ান সাকিব আহমেদ বলেন, হুমকি বা অপমানের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ভাইস চ্যান্সেলর একজন সম্মানিত মানুষ, আমরা কেন তাকে বদনাম করব।
তিনি বলেন, আমরা স্থাপত্য বিভাগের একটি সমস্যা নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। এরপর তিনি আমাদের গালিগালাজ করে ঘর থেকে বের করে দেন। সে আমাদের সবার সাথে খারাপ ব্যবহার করে। এমনকি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গেও।