ভারতের রাজধানী দিল্লির একটি সরকারি স্কুলে দুই কিশোরকে জোর করে খারাপ কাজ করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে সহপাঠীদের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, গত এপ্রিলে স্কুলের গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প চলাকালীন এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি, ১২ এবং ১৩ বছর বয়সী দুই শিক্ষার্থী ঘটনাটি নিয়ে মুখ খুলেছেন। পুরো ঘটনা জানা সত্ত্বেও শিক্ষকরা ঘটনাটি চাপা দিতে চেয়েছেন বলে অভিযোগ তাদের।
এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। দিল্লি কমিশন ফর উইমেন এই ঘটনার বিষয়ে দিল্লি পুলিশ ও স্কুল কর্তৃপক্ষকে নোটিশ পাঠিয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনার পর ক্ষমতাসীন আম আদমি পার্টি (ইউপি) এবং বিজেপি রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, স্কুলটি উত্তর-পশ্চিম দিল্লির রোহিনী এলাকায় অবস্থিত। গত এপ্রিলে স্কুল ছাত্রদের নিয়ে একটি গ্রীষ্মকালীন শিবিরের আয়োজন করা হয়। ১৩ বছর বয়সী এক ছাত্র অভিযোগ করেছে যে গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প চলাকালীন, ৫ থেকে ৬ জন সহপাঠী তাকে জোর করে কাছের একটি নির্জন পার্কে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে তাকে খারাপ কাজের হয়রানি করা হয়। সাতদিন ধরে নির্যা”তন চলে।
১২ বছর বয়সী এক ছাত্রও একই ছাত্রদের বিরুদ্ধে কুকর্ম করার হয়রানির অভিযোগ এনেছে। গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্পের সময় তাকে টয়লেটে নিয়ে গিয়ে নির্যা”তন করা হয়। দুজনকেই হুমকি দেওয়া হয়েছিল যে যৌ”ন নিপীড়নের বিষয়টি অন্য কাউকে না জানানোর জন্য।
১২ বছর বয়সী ওই ছাত্র আরও জানায়, সপ্তাহ দুয়েক আগে তাকে আবার স্কুলের ওয়াশরুমে নিয়ে গিয়ে নির্যাত”ন করা হয়।
শুধু তাই নয়, উভয় শিক্ষার্থীর অভিযোগ শিক্ষকদের জানিয়েও সমাধান হয়নি। বরং ঘটনাটি চাপা দিতে বলা হয়েছে।
১৩ বছর বয়সী ওই ছাত্র দাবি করেছে যে সে গত সপ্তাহে স্কুলের দুই শিক্ষককে বিষয়টি জানিয়েছিল। তবে বিষয়টি পুলিশকে না জানানোর নির্দেশ দেন তারা।
১২ বছর বয়সী ওই ছাত্র দাবি করেছে যে গত বছরের জুলাই এবং আগস্টে তিনি স্কুলের দুই শিক্ষককে যৌ”ন হয়রানির অভিযোগও করেছিলেন। অভিযোগ তো দূরের কথা, এ বিষয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা করতে নিষেধ করেন ওই দুই শিক্ষক। এমনকি, তার মা এ বিষয়ে কথা বলতে স্কুলে গেলে তাকেও একই কথা বলেছিল প্রধান শিক্ষক।
অবশেষে রোববার (২৭ আগস্ট) দুই শিক্ষার্থীর বাবা থানায় অভিযোগ করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা সবাই নাবালক। তাদের একটি শি”শু কল্যাণ সমিতির সামনে হাজির করা হয়েছে। এ বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে দিল্লি সরকার একটি পৃথক তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে। ঘটনাটি জেনেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানালে কোনো শিক্ষক বা বিদ্যালয়ের কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দিল্লি সরকার আরও বলেছে যে তাদের লক্ষ্য দিল্লি স্কুলগুলির মাধ্যমে সারা দেশে শিক্ষার মান স্থাপন করা। চরিত্রের উন্নতি প্রশ্নের বাইরে নয়।
তবে এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লির শিক্ষামন্ত্রী অতীশের পদত্যাগ দাবি করেছে বিজেপি।
দিল্লি বিজেপির সভাপতি বীরেন্দ্র সচদেব বলেছেন যে দিল্লি সরকার দাবি করে যে তারা দেশের সেরা শিক্ষা পরিকাঠামো তৈরি করেছে। শেখার সেরা পরিবেশ তৈরি করেছে। আসলে, আম আদমি পার্টি সরকারের আমলে দিল্লির সরকারি স্কুলগুলির অবস্থা ক্রমশ খারাপ হয়েছে। ‘ খবর হিন্দুস্তান টাইমস, টিভি নাইনের।