বাংলাদেশের সাংবাদিকদের একটি অন্যতম সমস্যা হলো, তারা নিজেদের সবজান্তা বলে ভাবে। অনেক সময় তারা নিজেদেরকে অধিকতর উচ্চতর ব্যক্তির আসনে বসিয়ে থাকে। যার কারনে বাঁধে বিপত্তি। তবে সেটা নিজের ক্ষেত্রে নয়। সাধারণ মানুষ-এর কাছে সাংবাদিকরা মহান ব্যক্তি হিসেবে ভাব নিয়েও থাকে। এবার সাংবাদিকদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোস্টে কচলে দিলেন পিনাকী ভট্টাচার্য। তার সেই পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-
একজন সাংবাদিকের জন্য বোকার মতো প্রশ্ন করাটা সমস্যার না। সাংবাদিকেরা বোকার মতো প্রশ্ন করতেই পারেন। ইন ফ্যাক্ট তাদের জন্য বোকার মতো প্রশ্ন করাটাই সঙ্গত। তেমন করেই প্রশ্ন করবে যেন সাধারণ মানুষ সেটা বুঝতে পারে।
কিন্তু, বাংলাদেশের সাংবাদিকরা নিজেদের সর্ব বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বলে ভাবে। তারা একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, কর্পোরেট সিইও, আদালতের বিচারপতি, শার্লক হোমস, ইলন মাস্ক, মিশেল ফুকো আর চে গোভেরা বলে ভাবে নিজেদের। এইটা একটা বিশাল সমস্যা বাংলাদেশের জন্য।
বাংলাদেশের সাংবাদিকেরা খবর প্রকাশ করেই খান্ত থাকেনা, সে একই সাথে ওই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আর বিচারক হয়ে বসে। সে জাজমেন্টাল হয়।
আপনারা আজকে বেকাত্তরের বেগুন বিজ্ঞানীদের নিয়ে হাসাহাসি করতেছেন অথচ দেখেন তাসনীম খলিলও একই দোষে দুষ্ট। সে এরে ওরে বাটপার বলে বদমাস বলে, মুর্খ বলে। কেউ কেউ বদমাস, মুর্খ বা বাটপার হইতেই পারে। যদি কেউ সত্যি সত্যিই বদমাস, বাটপার আর মুর্খ হয় আর তাদের বদমায়েসি, বাটপারি আর মুর্খতা যদি দেশ ও ঝাতির জন্য সমস্যাজনক হয় তাইলে সে তার পত্রিকায় কেন বদমায়েশি, বাটপারি আর মুর্খতাকে এক্সপোজ করে না? আর যদি তারা গুরুত্বপূর্ণ কেউ না হয়, তাইলে সে তাদের জাজ করে কেন?
বেকাত্তর টিভিতে বেগুন বিজ্ঞানীদের জায়গায় তাসনীম খলিল বসলেও প্রকৃতিতে ভিন্ন হলেও মর্মে একই রোল নিতো। এই সমস্যার মুল হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ওইটাই সুতিকাগার। ওইখান থেকে জুলিয়ান এস্যাঞ্জ বের হবে না। ওইখান থেকে ব্রিঞ্জেল সাইন্টিস্টই বের হবে কিন্তু সে নিজেকে মনে করবে জুলিয়ান এস্যাঞ্জ। আর এই ভাব দেখে কেউ কেউ তাসনিম খলিলকেও বাংলাদেশের গনতান্ত্রিক লড়াইয়ের সিপাহসালার বলে ভাবতে থাকে।
উল্লেখ্য, সাংবাদিকতা একটি বড় ধরনের মহৎ পেশা। কারণ সমাজের অপরাধ এবং অসঙ্গতিগুলো তুলে ধরাই তাদের কাজ। যার কারণে সেই বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়। অনেক সময় সরকার পক্ষ দুর্নীতির মাধ্যমে কোন অসঙ্গতি বা অপরাধ দেখেও না দেখার ভান করে। কিন্তু সাংবাদিকদের সংবাদমাধ্যমে বিষয়গুলো তুলে ধরার মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে সুরাহা দিতে বাধ্য করা হয়।