তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত আন্দোলনকারীদের জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে, সর্বোচ্চ আদালতের আদেশে ২০১৮ সালে কোটা বাতিল সংক্রান্ত সরকারের পরিপত্র বলবৎ হয়েছে । আজ বুধবার দুপুরে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে প্রতিমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
প্রতিমন্ত্রী তার ফেসবুক পেজে বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট শুধু স্থিতাবস্থার আদেশ দেয়নি, যদি স্থিতাবস্থার আদেশ দেয়া হতো তাহলে কোটা ইস্যুতে সরকারের সার্কুলার বাতিল করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকত। খেয়াল করতে হবে, সর্বোচ্চ আদালত কোটার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে আদেশ দিয়েছেন অর্থাৎ কোটা বিষয়ে সরকারের জারি করা পরিপত্র এখন আবার বলবৎ হলো।’
প্রসঙ্গত, মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। চার সপ্তাহ পর এই বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে। এ সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের সরকার কর্তৃক জারি করা পরিপত্র বলবৎ থাকবে।
এ সময় প্রধান বিচারপতি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান।
তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কয়েকজন সমন্বয়কারী গনমাধ্যমকে বলেছেন, তারা এখনি আন্দোলন স্থগিত করছেন না। রায় পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানাবেন।
গত পাঁচই জুন নবম থেকে ১৩তম গ্রেডের সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছিল হাইকোর্ট।
কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই রায় দেয়া হয়েছিল।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ। তবে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ লিখিত আদেশ না পাওয়ায় শুনানি পেছানো হয়।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আজ বুধবার ১০ম দিনের মতো কর্মসূচি শুরু করে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সরকারি চাকরিপ্রত্যাশী শিক্ষার্থীদের ‘বাংলা ব্লকেড’ নামক এই কর্মসূচিতে শুরুতে শুধুমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি কলেজগুলোর অংশগ্রহণ থাকলেও ধীরে ধীরে তা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়েছে।
এই আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা জানান, গতকালের মতোই সকাল ১০টা থেকে ঢাকার শাহবাগ, নীলক্ষেত, বাংলামোটর, সাইন্সল্যাব, কারওয়ানবাজার, শ্যামলী, বকশীবাজার, গুলিস্তান, পল্টন, রামপুরা ব্রিজ, ফার্মগেট, মহাখালীসহ অন্তত ১৭টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়েছে।
এদিকে সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব মহাসড়কে অবস্থান নিতে শুরু করেছে ঢাকার বাইরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে সরে আসবে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।