ছিলেন বাড়ির কেয়ারটেকার, জালিয়াতির মাধ্যমে স্বল্প সময়ের ব্যাবধানে হয়ে গেলেন কোটিপোতি। এমনই একটা জালিয়াতির অভোযোগ পত্র দায়ের করার ভিত্তিতে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে। ভুক্তভোগী প্রবাসী, দীর্ঘদিন দেশে না আসার কারনে এবং সঠিকভাবে খোজ খবর না রাখার কারনেই এমন ঘটনার সুত্রপাত ঘটেছে বলে প্রথমিকভাবে ভুক্তভোগীর এজাহারের অভিযোগ পত্রে লেখা অভিযোগের ধরনের মাধ্যমে বোঝা যায়। তবে এই জালিয়াতির বিষয় বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ভুক্তভোগী নিজেই।
একই গ্রামের নবী উল্লাহ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার দুপ্তরা ইউনিয়নের পাঁচবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগীরা নারায়ণগঞ্জ প্রধান বিচারিক আদালতে দুটি মামলা, আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা এবং প্রতারক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। অভিযোগে জানা গেছে, পাঁচবাড়িয়া গ্রামের খন্দকার মোহাম্মদ আমান ও তার ছেলে খন্দকার মোহাম্মদ তাসফিকসহ পরিবারের সবাই আমেরিকায় থাকেন। একই গ্রামের লতিফ এবং তার ছেলে নবীউল্লাহ তাদের বাড়ি এবং তাদের সমস্ত সম্পত্তি তত্ত্বাবধায়ক হিসাবে দেখাশোনা করতেন। তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক লতিফ ও তার ছেলে নবীউল্লাহ জন্ম সনদ, সার্টিফিকেট ও পাওয়ার অব অ্যাটর্নি জাল করে আমেরিকা প্রবাসী মোহাম্মদ তাসফিকের স্বাক্ষর জাল করে ৫৩ শতাংশ জমি আত্মসাৎ করেন। পাঁচবাড়িয়া ইপিজেডের জন্য জমি অধিগ্রহণ করেছে সরকার। জমি অধিগ্রহণ বাবদ ১ কোটি ৪০ লাখ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বাবা-ছেলে।
প্রবাসী তাসফিক অভিযোগ করে বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে আমেরিকায় অবস্থান করছি। দলিল জালিয়াতির মাধ্যমে আম মোক্তার নামা করা হয়েছে। তাছাড়া আমি বাংলা লিখতে পারি না। কিন্তু নথিতে স্বাক্ষর করা হয়েছে বাংলায়। যা জালিয়াতির মাধ্যমে করা হয়েছে। নবী উল্লাহ বাদী হয়ে তাসফিকের বাবা খন্দকার মোহাম্মদ আমান ও তার বাবা লতিফ, মা রেখা ও ভাই আল আমিনসহ চারজনকে আসামি করে নারায়ণগঞ্জ মুখ্য বিচারিক আদালতে মামলা করেন। আদালত বিষয়টি তদন্তের জন্য আড়াইহাজার থানাকে নির্দেশ দেন। পুলিশ বর্তমানে বিষয়টি তদন্ত করছে। অপরদিকে, তসফিকের চাচা খন্দকার জমি না কিনে দলিল জাল করে আরও ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খন্দকার পারভীন নারায়ণগঞ্জ প্রধান বিচারিক আদালতে মামলা করলে আদালত নবীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। বর্তমানে পলাতক রয়েছেন নবীজি। মঙ্গলবার (২১ জুন) আড়াইহাজার থানার ওসি আজিজুল হক হাওলাদার বলেন, আদালত পুলিশকে দুটি মামলা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিবেদন দেওয়ার পর একটি মামলায় নবীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। অন্য মামলাটি তদন্তাধীন।
উল্লেখ্য, বাড়ি কেয়ারটেকার, মালিকের অনুপুস্থীতিতে বাড়ির সবকিছু দেখভাল করার দায়িত্বে নিয়োজিত এমনই একটি গুরুপুর্ন দায়িত্বে চাকুরি পেয়ে বিশ্বসের অমর্যাদা করেছে। জালিয়াতি করে মালিকের প্রায় ৫৩ শাতাংশ সম্পত্তি নিজেদের করে নিয়েছেন এমনই একটা জালিয়াতির জন্য থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী প্রবাসী নিজেই। এমনকি তিনি বাংলায় লিখতে অপারগ তার পরেও তার নামের সম্পত্তি অভিযুক্তদের নামে করে নিতে ভুক্তভোগীর সাক্ষর বাংলায় জাল করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী প্রবাসী।