বর্তমান সময়ে বিএনপি’র রাজনীতির অন্যতম অংশ তাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর মাধ্যমে উন্নতমানের চিকিৎসা দেওয়া। বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন। তার অসুস্থতা নিয়ে বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ নানা ধরনের মন্তব্য করে চলেছে। এবার খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে একটি উদাহরণ টেনে মন্তব্য করলেন সমালোচক সুলতান মির্জা। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিষয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন। তার পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
এই দেশে শত শত, হাজার হাজার জটিল কুটিল রোগের রোগী আছে, যাদের বয়স ৭৫ এর উপ্রে, ডাক্তারেরা হাসপাতাল থেকে একটা বাচাইলে আল্লাহ বাচাইতে পারে নামক একটা মৌখিক প্রেসক্রিপশন দিয়ে রিলিজ দিয়ে দিছে, কারন এতো রোগ, এতো সমস্যা যে, আর চিকিৎসা নাই বা সম্ভব না কিংবা টাকা খরচ করেও লাভ নাই টাইপের।
আমার পরিচিত এক ভদ্র মহিলার কথা জানি, যিনি তার ৭৫ প্লাস নানী কে আজ থেকে দুই বছর আগে প্রথমে মেহেরপুর, তারপরে কুষ্টিয়া, অত:পর ঢাকায় সিএমএইচে চিকিৎসা করিয়ে অত:পর সিএমএইচ থেকে আমাদের আর কিছু করার নাই এখন বাচাইলে আল্লাহ বাচাইতে পারে নামক মৌখিক প্রেসক্রিপশন নিয়ে বাড়ি নিয়ে গেছে, সেই পরিচিত ভদ্র মহিলার নানী বাড়িতে গিয়ে আর যেহেতু বাচবেন না, উনার নাতি নাতনি যার যার বিয়ে বাদ আছিলো সবটিরে বিয়া দিয়া মরার আগে নাত জামাই বউ দেখার খায়েশ মিটিয়ে, দুভার্গ্য না সৌভাগ্য বলতে পারবো না সর্বশেষ মাস ছয়েক আগে পর্যন্ত জানি আল্লাহ উনাকে এখনো বাচিয়ে রেখেছে, আগে হাটতে পারতো না এখন নাকি উনি অনেক সুস্থ।
খালেদা জিয়ার মামলার যখন রায় হয় চ্যানেল আই অনলাইনের একটা সম্পাদকীয় লেখায় লিখেছিলাম তখন খালেদার শরীরে মোট রোগের সংখ্যা ৩২ টা, সেই লেখার বয়স ৫ বছরের বেশি হয়ে গেছে, তখনই খালেদাকে দেশে চিকিৎসা নাই, ম্যাডাম আর বাচবে না, বিদেশে নিয়ে যেতে হবে ইত্যাদি প্রেশারে মাথা খারাপ অবস্থা ছিলো। সেই খালেদা আজকে ৫ বছর পরে এখনো বেচে আছে।
ইতিপুর্বে একটা লেখা শেয়ারে উল্লেখ করেছিলাম যা আমার পেইজের টাইম লাইনে রয়েছে যে আরপিসির ৪০১ ধারা নামক এর চেয়ে সেরা ব্যাখ্যা আর নাই। আদালতের রায়ে সাজাপ্রাপ্ত কোন আসামীর মানবতা মানবিকতা তিনি যিনিই হোক অধিকার ঐটুকুই কাগজ তাকে যতোটুকু দিয়েছে। ৪০১ ধারার নানান মনগড়া বিএনপি দিয়েই যাচ্ছে, দিয়েই যাচ্ছে, যদিও ৪০১ ধারার বাহিরে আরো যেসব লাইন আছে তা বিএনপি বলছে না, সেটা হচ্ছে কোন ফৌজধারী মামলায় দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত আসামীর পাসপোর্ট ইস্যু অসম্ভব বিষয়, দ্বিতীয়তো ফৌজধারী মামলায় দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে বিদেশী দুতাবাস ভিসা ইস্যু নাও করতে পারে টাইপের ফরেন পলিসি। মোটকথা ৪০১ ধারা কিঞ্চিত রাখিয়া, কিঞ্চিত ছাড়িয়া সরকার খালেদাকে বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে ছাড় দিলেও এর পরের প্রক্রিয়া আরো জগন্য যা সমাধান খুব সহজ বিষয় নয়।
এমন অবস্থায় দাঁড়িয়ে খালেদার জন্য যাদের মন কান্দে তাদের উচিত আল্লাহর কাছে খালেদার জন্য দোয়া করা, যাতে আমার পরিচিত ভদ্র মহিলার নানীর মতো, আরো বছর দশেক খালেদা বেচে থাকে, এটলিষ্ট জোড়াতালি ব্যাতিত দ্বিতীয় পদ্মা সেতু দেখে যাওয়ার জন্য।