Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / National / সরকারের সিদ্ধান্তে উদ্বেগ পোশাক খাতে

সরকারের সিদ্ধান্তে উদ্বেগ পোশাক খাতে

রপ্তানি খাতে নগদ সহায়তা প্রত্যাহারের হঠাৎ সিদ্ধান্ত রপ্তানিমুখী পোশাক শিল্পকে সংকটে ফেলবে বলে মনে করছেন মালিকরা।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ২০২৬ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের ক্লাবে যোগ দিলে নগদ সহায়তা রাখার সুযোগ থাকবে না এর অংশ হিসেবে নগদ সহায়তা পর্যায়ক্রমে বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।

দেশের রপ্তানি আয়ের ৮৪ শতাংশ আসে পোশাক খাত থেকে, পোশাক শিল্প মালিকরা বলছেন, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এটি করা যেত কারণ, এ সময়ে ডলার সংকটসহ নানা কারণে পোশাক খাত চাপের মুখে রয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু জার্মান ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, “নগদ সহায়তা ধীরে ধীরে কমবে।” কিন্তু হঠাৎ করে তা বাতিল করার জন্য মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে কোনো চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মাজবাউল হক ডয়চে ভেলেকে বলেন, “এটা বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত।” সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

সরকার রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কমিয়েছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, পোশাক খাতের পাঁচটি এইচএস কোডের পোশাক রপ্তানির জন্য নগদ সহায়তা আর পাওয়া যাবে না। পণ্যগুলি হল নিটওয়্যার টি-শার্ট, শার্ট, ট্রাউজার, বোনা জ্যাকেট, ব্লেজার ইত্যাদি। এবং রপ্তানিমুখী দেশীয় টেক্সটাইল খাতে ট্যারিফ বন্ড এবং শুল্ক ড্র-ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। . ইউরো অঞ্চলে টেক্সটাইল খাতে রপ্তানিকারকদের জন্য অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা দুই শতাংশ থেকে এক শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে পোশাক খাতে ছোট ও মাঝারি কারখানার জন্য রপ্তানি প্রণোদনা চার শতাংশে রয়ে গেছে তৈরি পোশাক খাতে নতুন পণ্য বা নতুন বাজার। চার শতাংশ থেকে কমিয়ে তিন শতাংশ করা হয়েছে ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নতুন বাজার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে এছাড়া তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশেষ নগদ সহায়তা ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৫০ শতাংশ করা হয়েছে যা জানুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।

কি বলছেন গার্মেন্টস শিল্প মালিকরা

যে পাঁচ ধরনের বুনন ও বোনা পণ্য থেকে নগদ সহায়তা পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়েছে সেগুলো শীর্ষ রপ্তানি পণ্য। পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিম ডয়চে ভেলেকে বলেন, “যুদ্ধের কারণে পোশাকের অর্ডার কম আছে।” এবং পাঁচ-ছয় মাস আগে আমরা অর্ডার নিয়েছিলাম আমরা নগদ সহায়তার ভিত্তিতে মূল্য নির্ধারণ করেছি এখন সেই মূল্য আর সমন্বয় করা যাচ্ছে না আমরা ক্ষতির মধ্যে হব এবং যারা এই সেক্টরে নতুন তারা নিরুৎসাহিত হবেন।

তার মতে, ‘পাঁচটি আইটেমে নগদ সহায়তা সম্পূর্ণ মওকুফ করা হয়েছে।’ কিন্তু সেসব পণ্য আমাদের প্রধান জিনিস এবং সবচেয়ে বড় রপ্তানি এবং আমরা যে নতুন বাজার তৈরি করেছি তা আবার ধসে পড়বে। সংকটের সময় আমরা জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ায় নতুন পোশাকের বাজার তৈরি করেছি এই বাজার ধরে রাখা কঠিন হবে।

তিনি বলেন, ‘গ্যাস নেই, ডলারের দাম বেড়েছে ফলে কাঁচামালের দাম বেড়েছে সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ বেড়েছে উৎপাদনও কমেছে নগদ সহায়তা সরিয়ে নিলে দাম বেড়েছে। উৎপাদন বাড়বে তখন প্রতিযোগিতা খুবই কঠিন হবে।

2026 সালে নগদ সহায়তা ছাড়ার বাধ্যবাধকতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘2026 এখনও তিন বছর বাকি। আমাদের সঙ্গে আলোচনা করে ধাপে ধাপে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত কিন্তু আমাদের সঙ্গে কথা না বলে হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পোশাক খাত বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, ২০২২-২৩ অর্থবছরে পাঁচ হাজার ৫৫৬ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত অর্থবছরের তুলনায় এ রপ্তানি ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ বেশি তবে চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধে প্রবৃদ্ধির গতি কমেছে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে দুই হাজার ৭৫৪ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। প্রবৃদ্ধি হয়েছে ০. ৮৪ শতাংশ

বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মো. হাতেম বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে নিট সেক্টরের স্পিনিং মিল ও পিছিয়ে পড়া শিল্পগুলো। আমরা যে পোশাক রপ্তানি করি তার 56 শতাংশ হল নিটওয়্যার সম্পূর্ণ নগদ সহায়তা এই খাতে দেওয়া হয়েছে এটি আমাদের প্রধান উদ্বেগ অন্যান্য গার্মেন্টস থেকে বিভিন্ন হারে ছাড় আমাদের কাছে মনে হচ্ছে কিছু ত্রৈমাসিক আসলে নগদ সহায়তা হ্রাস করেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা এই সেক্টরের স্টেক হোল্ডার।’ আমাদের সাথে কথা না বলে কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল 2026 সালের মধ্যে নগদ সহায়তা কীভাবে পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা হবে তা আমাদের সাথে আলোচনা করে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত যা সহনীয় হত আমরা প্রস্তুতিও নিতে পারতাম কিন্তু এখন আমরা সংকটে আছি।

তিনি বলেন, আমরা সরকারের কাছে প্রণোদনা বাবদ সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা পাওনা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ,সলাম বলেন, ‘পোশা শিল্পে দাঁড়ালে দাঁড় করানো অনেক কথার এখন ওভারটাইম নেই৷ ফলে রাজনীতি হচ্ছে নতুন মজুরি সংযোজন কিছু অঙ্গীকার করা হয়েছে৷ আমরা চাই সরকার যে সিদ্ধান্তই নিক তা শক্তির কল্যাণে হয়৷ স্বেচ্ছাসেবীদের জন্য স্বল্পমূল্যে রেশন শুরু করা।

প্রণোদনা থাকবে না

কেন্দ্র ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-র অর্থনীতিবিদ ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘প্রণোদনা দেওয়া ভালো না খারাপ এই বিতর্কের আর আমাদের সুযোগ নেই৷ আমাদের সমাধানের দিক দিয়ে চিন্তা করতে হবে৷ বিনামূল্যে দিতে হবে৷ না ঘোষণা ২০২৬ আমাদের বিশ্ব সংস্থার ভিত্তিতে নির্বাচনের নিয়ম মেনে চলতে হবে৷ তাই এই প্রয়োজন

পোশাকশিল্পকে হাতিয়ার বানাবেন না বিজিএমইএ

তার কথা, ‘বাংলার নাম একবার এসেছে না, ধাপে ধাপে দেওয়া হচ্ছে৷ আমার অপেক্ষায় উদ্দেশ্য ও মাঝারি অংশের জন্য যতদিন বেশি রাখা হয়, ভোট করা উচিত৷ পোশাক খাতের মধ্যেই সাফল্য অর্জন করেছে৷ আর নগদ সহায়তার জন্য একটি মধ্যস্বত্বভোগী ব্যক্তিদের উদ্ভাবন করা হয়েছে তাদের কাছ থেকে টাকাটা নিয়ে নেওয়া৷ এর ফলে এটা পর্যায় অনুসারে নিলে পোশাক খাওয়াতে কোন বড় নেতিবাচক প্রভাব বলে মনে হয় না৷

তিনি প্রশ্নে বলেন, ‘বাংলাদেশ যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে যাবে, এটা নিয়ে গত পাঁচ বছর ধরে বিভিন্ন গ্রুপের স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে সরকার কথা বলছে৷ কী করতে যাচ্ছে তার পরিকল্পনা প্রকাশ করা হয়েছে৷ পোষাক বর্ণনার নেতা জানাতে, তাদের পরিবারও আছে৷ কেউ যদি বলেন না, ঠিক নয়৷’

আকাশ শূন্য করা নয়

প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, ‘নাগদ সহায়তা আপনাকে কমতে হবে৷ ২০২৬ এর মধ্যে অংশ দিতে হবে৷ তবে এইভাবে প্রকাশ করে শূন্য করে আমার জানার কথা বার্তাবাহক কোনো ঘোষণা দেয়৷ বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো চিঠিও আমরা দিই৷ সপ্তাহ আমাদের কী করতে হবে তা পুরো জানাতে পারব৷

সব রফতানি খাই নগদ সহায়তা কমানোর কথা বাংলাদেশ ব্যাংক৷ দলের প্রথম দফায় সব নগদ সহায়তা মাত্র ১০ ভাগের মতো কমছে৷ এর মধ্যে আছে সামঞ্জস্যপূর্ণ ধরনের পণ্য, কৃষিপণ্য, প্রজেক্টজাত কৃষি পণ্য, আসবাবপত্র, প্লাস্টিক পণ্য, হিমপাট চড়ি, মোটরসাইকেল, পেট বোতল ফ্লেক্স, জাহাজ সহ ৩০-৩৫ পণ্য৷

ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, ‘যারা সব শিল্পকে এখনো প্রট করার সময় দেওয়া দরকার, তাদের ক্ষেত্রে সেই জিনিসের মধ্যে যতটা সম্ভব কমিয়ে সফলতা অর্জনে সহায়তা করা দরকার৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকতে হবে৷ আর নগদ সহায়তা মারামারি প্রয়োজন, সরকার তাদের বিকল্প দিতে পারে, প্রশ্ন নিয়ে ভাবা যেতে পারে৷’ -ডয়চে ভেলে৷

About Zahid Hasan

Check Also

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সেন্টমার্টিন লিজ দেওয়ার বিষয়ে যা জানালেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তী সরকার সেন্টমার্টিন দ্বীপকে লিজ দিচ্ছে। তবে প্রধান …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *