ক্ষমতাসীন সরকার আবারও ক্ষমতায় থাকার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা করছে বলে বিএনপির নেতাদের দাবি। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে সরকার ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মত এবার নির্বাচন করতে চায় আর সেজন্য আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। এই নির্বাচন কমিশন সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এসেছে বলে বিএনপির শীর্ষ নেতারা মন্তব্য করেন। সরকারের নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে সিইসি বলে যা বললেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য ভিন্ন ধরনের নীল নকশা করেছে। এই নীলনকশা বাস্তবায়নের প্রধান ম্যানেজার হচ্ছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সোমবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন নামক একটি সংগঠনের উদ্দ্যোগে বিগত দিনে বিএনপির আন্দোলনে গু/ম, খু/ন হওয়া পরিবারগুলোর সাথে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা নিজেই একটি দুর্যোগ। দুর্যোগ হিসেবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি আবির্ভূত হয়েছেন। দুর্যোগের কারণে নিখোঁজ ব্যক্তির পরিবার এখানে এসেছে। শেখ হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন গু/মের সংখ্যা বাড়বে। ক্র/সফায়ারের সংখ্যা বাড়বে। বিচারবহির্ভূত হ/ত্যাকাণ্ড ঘটবে। কারণ রাষ্ট্র ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য এমন কোনো জঘন্য ও নৃশংস কাজ নেই যা এ সরকার করবে না। তারা তাদের অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে সব অপকর্ম করবে।
তিনি বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) সত্যিকার অর্থে জনগণের ভোটে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার হলে বিরোধী দলের অনেক নেতাকর্মী পৃথিবী ছেড়ে চলে যাবেন কেন? কেন তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না? তারা নিরুদ্দেশ হবে কেন? তাদের পরিবার আজ কাঁদছে কেন? তাদের আত্মচিৎকার-বুক ফাটা কান্না আমাদের শুনতে হচ্ছে কেন? এজন্য সম্পূর্ণ দায়ী শেখ হাসিনা।
দুঃশাসনের বিরুদ্ধে কেউ যাতে দুই কথা বলতে না পারে সেজন্য ভয়ঙ্কর পরিবেশ তৈরি করেছেন শেখ হাসিনা। বিরোধী মতাদর্শের লোকজনদেরকে তিনি গু/ম করছেন। ক্র/সফায়ার দিচ্ছে। সে এসব করে অন্যদের ভয় দেখাতে চায়। টা তাদের এক ধরনের পলিসি, এক ধরনের নীতি। তারা সেই নীতি অনুসরণ করার চেষ্টা করছে।
নির্বাচনে কেউ তলোয়ার নিয়ে দাঁড়ালে রাইফেল নিয়ে দাঁড়ান- প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের মন্তব্য প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, এই নির্বাচন কমিশনার শেখ হাসিনার একেবারে নিজস্ব ক্রীতদাস হিসেবে কাজ করছে। এটাই তিনি প্রমাণ করছেন। দেশের একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান কিভাবে এ কথা বলতে পারেন। যত অবৈধ রাইফেল, বন্দুক তলোয়ার সবতো আওয়ামী লীগের হাতে। ভোটাররা তো তলোয়ার, রাইফেল নিয়ে যায় না। তারা তাদের অধিকারটা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেই অধিকারটা হচ্ছে ভোট কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দেবে। এই নিশ্চয়তা চায় ভোটাররা।
তিনি আরও বলেন, তলোয়ার নিয়ে আসলে রাইফেল নিয়ে নামবেন এই কথাটা কেন আসবে? আপনি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে আছেন। জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে এমন পরিবেশ তৈরি করা নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব। যতটুক ক্ষমতা আছে তাতে এতটুক। আপনিতো এটা করবেন না। যেদিন আপনাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সেদিন থেকে সারা দেশের মানুষ জানে আপনি প্রধানমন্ত্রী নীল নকশা বাস্তবায়ন করবেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘আজ জ্বালানি কেনার টাকা নেই, যা দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরির উপকরণ কেনা যায়। ব্যাংকে টাকা নেই, যা আছে তার বেশির ভাগই বিদেশে পাচার করেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও তাদের স্বজনরা। এ অবস্থায় জনগণ বেঁচে থাকতে পারবে কি না সেই শঙ্কায় পড়েছেন।
এসময় বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে ক্রীতদাসের মত কাজ করছেন নির্বাচন কমিশন প্রধান বলে মন্তব্য করেন বিএনপির বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে নতুন পরিকল্পনা করেছে আর সেগুলো বাস্তবায়ন করছে সিইসি।