সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ বেশ বড় অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। যেটা নিয়ে অর্থনীতিবিদরা উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগের প্রদূর্ভাবের পর দেশের অর্থনীতি কিছুটা সংকটাপন্ন অবস্থায় মধ্য দিয়ে পার হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটের কারনে বাংলাদেশের ওপর প্রভাব পড়েছে যার কারনে বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
গত অর্থবছরের প্রথম এগারো মাসে বাণিজ্য ঘাটতি তিন হাজার ৮১ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। একই সময়ে চলতি হিসাবের ঘাটতি ১৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের চলতি হিসাবের ব্যালেন্সের (বিদেশি লেনদেনের অর্থ পরিশোধ) হালনাগাদ তথ্যে এ তথ্য উঠে এসেছে।
শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানির অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাপক বাণিজ্য ঘাটতি তৈরি করেছে। তবে দেশের অর্থনীতি স্বাভাবিক রাখতে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে রেমিটেন্স বাড়াতে হবে; তা না হলে অর্থনীতি সংকটে পড়বে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, সদ্য শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৮১ কোটি ৬০ লাখ ডলারে। দেশীয় মুদ্রায় বর্তমান বিনিময় হারে (প্রতি ডলার ৯৩.৪৫ টাকা) এর পরিমাণ দুই লাখ ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি।
এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি ছিল দুই হাজার ৭০ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে পুরো ঘাটতি ছিল ২ হাজার ২৮০ কোটি ডলার।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে মাসে রপ্তানি বেড়েছে ৩২.৯৮ শতাংশ। অন্যদিকে আমদানি বেড়েছে ৩৯.০৩ শতাংশ। আলোচিত ১১ মাসে দেশটি রপ্তানি থেকে আয় করেছে ৪ হাজার ৪৫৬ কোটি ডলার। এ সময় পণ্য আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৭ হাজার ৫৪০ কোটি ডলার। আমদানি ব্যয় থেকে রপ্তানি আয় বাদ দিলে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৮১ কোটি ডলার।
উল্লেখ্য, এই বিশাল অঙ্কের বাণিজ্য ঘাটতি পূরণ করা বাংলাদেশ সরকারের জন্য এখন একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ আমদানি কমিয়ে কিছুটা হলেও এই বাণিজ্য ঘাটতি পূরণ করতে সক্ষম হবে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমদানি কমানোর জন্য নির্দেশনা দিয়েছে। এদিকে বিদেশ থেকে যেকোনো ধরনের গাড়ি আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে সরকার।