Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সতর্ক করা হয়েছে মোমেনকে, জানা গেল কারণ

সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে সতর্ক করা হয়েছে মোমেনকে, জানা গেল কারণ

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের একেরপর এক বক্তব্য  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে তুমুল সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।  বিশেষ করে কিছুদিন আগে তিনি তার বক্তব্যে জানান, বাংলাদেশের মানুষ বর্তমানে বেহেস্তে রয়েছে এরপর শুরু হয় তুমুল সমালোচনা ও বিতর্কের ঝড়।  তার রেশ না কাটতেই ফের আবারও আলোচনায় উঠে আসলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।  তার এমন বক্তব্যে ধীরে ধীরে ক্ষুব্ধ হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।

আবদুল মোমেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন না বলে তারা মনে করেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা শুক্রবার  এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আবদুল মোমেনের ‘অবিরোধিতা’ মন্তব্য এক বছর ধরে সবচেয়ে বেশি সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। যে কোনো সময় তাকে গণভবনে তলব করা হতে পারে।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য বারবার সরকারকে বিব্রত করেছে। সম্প্রতি সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে তাকে সতর্ক করা হয়েছে।

 

আবদুল মোমেন কয়েকদিন আগে স্বীকার করেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ স্বর্গে বাস করছে’ এমন মন্তব্যের কারণে সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে তাকে সতর্ক করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও তিনি অবিরাম বলতে থাকেন।

 

তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দলীয় হাইকমান্ডের কাছে অভিযোগ করবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা।

 

আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখতে ভারতের ভূমিকা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের বক্তব্য শুক্রবার জাতীয় দৈনিকগুলো তুলে ধরেছে।

 

এরপরই শুরু হয় সমালোচনা। স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগকে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের জন্য দায়ী করে আসছে।

 

ক্ষমতায় থাকার জন্য আওয়ামী লীগ দেশের অনেক স্বার্থ ভারতের হাতে তুলে দিয়েছে বলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো প্রায়ই মন্তব্য করে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা মনে করেন, বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ মন্তব্য রাজনৈতিক বিরোধীদের আরও সুযোগ দিয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ‘ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে গিয়ে অনেকের সঙ্গে দেখা হয়েছে।

 

দেশে গিয়ে বলেছি শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে। এমনটাই আজ অনেকেই বলেছেন। শেখ হাসিনা আমাদের রোল মডেল। আমি ভারত সরকারকে অনুরোধ করেছি তাকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার।

 

এর আগে স্বর্গে থাকার কথা বলে চরম সমালোচনার জন্ম দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এই মন্তব্যের ক্ষোভ প্রশমিত হতেই তিনি আবারও সমালোচনার জন্ম দেন। যা বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বড় অস্ত্র হিসেবে জব্দ করেছে।

 

তবে সরকারের পক্ষ থেকে শুক্রবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের বক্তব্যকে ব্যক্তিগত মতামত বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

 

শুক্রবার রাজধানীর পলাশী মোড়ে জন্মাষ্টমীর এক অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ কথা যিনি বলেছেন, এটা তার ব্যক্তিগত মতামত হতে পারে। এটা আমাদের সরকারের বক্তব্য নয়, দলের বক্তব্যও নয়।

 

আমি সবার কাছে বিষয়টি পরিষ্কার করতে চাই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এমন কোনো অনুরোধ (ক্ষমতায় থাকার) করে না, কখনো করেনি। শেখ হাসিনার সরকার কাউকে দায়িত্ব দেয়নি।

 

আমাদের শক্তির উৎস বাংলাদেশের জনগণ। বাইরের কেউ আমাদের ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে পারবে না। আল্লাহর ইচ্ছা ও জনগণের সমর্থনে আওয়ামী লীগ টিকে আছে। আগামীতেও চলবে ইনশাআল্লাহ।

 

ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আমরা ভারতের সঙ্গে শত্রুতা চাই না। 21 বছরের শত্রুতার পর আমরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছি। দুঃসময়ে ভারত আমাদের বন্ধু। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক বিদ্যমান।

 

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসে দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারত ছিটমহল বিনিময় করেছে। কিছু সমস্যা অগ্রগতি হবে। সেপ্টেম্বরে আরও কিছু সমস্যার সমাধান হবে।

 

তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনকে অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য না করার পরামর্শ দেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, এতে ভারতও লজ্জিত, এ কথা কীভাবে বলতে পারেন। আমি বন্ধু, সম্পর্ক ভালো, অযথা কথা বলে নষ্ট করো না।

 

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, ‘ক্ষমতায় থাকার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মন্তব্য আমাদের দলের নয়, সরকারেরও নয়। এটা তার ব্যক্তিগত মতামত। তাই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কথার দায় সরকার ও দল নেবে না।

 

তিনি বলেন, দুঃসময়ে ভারত আমাদের বন্ধু। কিন্তু ক্ষমতায় থাকার ক্ষেত্রে ভারতের কোনো ভূমিকা নেই।

 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাশান মাহমুদ শুক্রবার যুগান্তরকে বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তিতে শক্তিশালী। কোন বিদেশী শক্তির উপর নির্ভরশীল নয়।

 

কিন্তু ভারত আমাদের প্রকৃত বন্ধু। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করে বলেন, আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ বিষয়ে আগেই বলেছেন।

 

নাম প্রকাশ না করে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর একজন সদস্য যুগান্তরকে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বহির্বিশ্বের কাছে একটি দেশের মুখপাত্র। এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশের অবস্থান প্রকাশ করা হয়।

 

কিন্তু আমাদের দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হরহামেশাই বলছেন, বিদেশ দূরে থাক এখন দেশে মুখ বন্ধ রাখা ছাড়া উপায় নেই।

 

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো র ব্যক্তিগত মত হতে পারে।

 

জুনে অ জাতীয় নিরাপত্তা দেবষ্টা দোস্তে পররাষ্ট্র উপরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন শক্তির ধর্মের উপর, মন্দির চণ্ড এবং পূজামপে বিশ্বাস নিয়ে মন্তব্য করেন।

 

তার এই বয়ক্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া হিন্দু সম্প্রদায় করে বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য ঐক্য ও পূজা। তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ করে। সিলেটে বাজার বেফাঁস মন্তব্য করেন তিনি আপনার মধ্যে পড়েন।

বাংলাদেশ-ভারতের নিয়ন্ত্রণে চলে এমন ধারণা অনেক সাধারণ মানুষের মধ্যে।  এ বিষয় নিয়ে বহুবার বিতরকের মুখে পড়তে হয়েছে বাংলাদেশ বর্তমান সরকারকে।  তবে এবারে এ বিষয়ে  এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্যে অনেকটাই স্পষ্টতার প্রমাণ পেয়েছে সাধারণ মানুষ।

About Nasimul Islam

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *