আড়াই বছর প্রেম করার পর বিয়ে। পাঁচ বছরের বৈবাহিক সম্পর্ক।কিন্তু সরকারি চাকরি পাওয়ার পর স্বামী তার ডান হাত কে/ টে ফেলেছে বলে অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী। পূর্ব বর্ধমানের কোজলসার বাসিন্দা রেনু খাতুন সেই সংসারে আর ফিরতে চান না। তিনি তার স্বামী শের মোহাম্মদ ও তার শ্বশুরবাড়ির অন্যান্য সদস্যদের কঠোর শাস্তি দাবি করেন। সোমবার দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শুয়ে তিনি এ কথা বলেন।
নার্সিংহোমের বিছানায় শুয়ে রেণু বলল, আমি চাই ওদের আরও কঠিন থেকে কঠিন শাস্তি হোক। তাদের সবাইকে খুঁজে বের করা হোক যারা আমার এই অবস্থা করেছে। তার বন্ধুরা তার মগজ ধোলাই করেছে। বলতেন, ‘চাকরি পেলে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। কিন্তু আমি তাকে অনেক বলেছি, ‘আমি যাব না।’ কিন্তু সে শোনেনি। সম্প্রতি সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র পেয়েছেন রেণু। তিনি বলেন, আমি যে সরকারি চাকরি পেয়েছি তাতে যোগ দিতে চাই। আমি আরো পড়াশুনা করতে চাই।
রেণু আরও বলেন, আমরা প্রেম করি এবং বিয়ে করি। আমাদের বাবা-মা পরে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু এখন তার সঙ্গে আমার সংসার থাকবে না। আমি আমার বাবা-মায়ের সঙ্গেই থাকব। তার বন্ধুদেরও শাস্তি হোক। একই সঙ্গে তার বাবা-মাকেও শাস্তি দেওয়া উচিত। তারাও এর সাথে জড়িত।
তিনি তার স্বামীর পাশে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছিলেন। হঠাৎ তীব্র ব্যথায় ঘুম ভেঙ্গে গেল। চিৎকার করলেও শোনা যায়নি। কারণ, মুখে বালিশ চাপা। ডান হাতে বারবার ভারী হা/ তুড়ির আঘাত। এ সময় হাতুড়ির আঘাতে তার ডান হাত ভেঙে যায়। এরপর বিশাল টিনের কাঁচি দিয়ে রেনু খাতুনের ডান হাতের কব্জি কেটে ফেলা হয়। এমনই অভিযোগ উঠেছে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের বাসিন্দা রেণুর স্বামী শের মহম্মদ ওরফে সরিফুলের বিরুদ্ধে। রেনুর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে কেতুগ্রাম থানার পুলিশ।
শনিবার রাতের নৃ/ শংস ঘটনার পর রেণু বর্তমানে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। চিকিত্সকদের মতে, রেনু জ্ঞান ফিরেছে। বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন। তবে ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পর যথারীতি তার ডান হাতে প্রচণ্ড ব্যথা। তারপরও রেনুর ইচ্ছাশক্তি অটুট। হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে তিনি বলেন, “আমরা লড়াই চালিয়ে যাব! অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তারেরও দাবি জানান তিনি। “যারা আমার হাত কেটে ভবিষ্যৎ ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে জড়িত তাদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।” .
রেনুর শ্বশুর দাবি করেন, শের মোহাম্মদ আশঙ্কা করেছিলেন যে সরকারি হাসপাতালে নার্সের চাকরি পাওয়ার পর তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যাবে। এ কারণে স্ত্রীর ওপর নির্মম নির্যাতন চালায় সে। অচেতন স্ত্রীকে কাটোয়া হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন তার বন্ধুরাও। রেনুকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর তার স্বামী পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
বাপের বাড়ির লোকজনের আরও দাবি, রেনুর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ডেকে ফোন করে ওই কা/ টা হাত নিয়ে যেতে বলে। শ্বশুর বাড়ির লোকেরা ওই হাত নিয়ে কাটোয়া হাসপাতালে পৌঁছান। সেখান থেকে রেণুকে বর্ধমানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এবং পরে দুর্গাপুরে ভর্তি করা হয়। তবে এই ডামাডোলে রেনুর শ্বশুর বাড়ির লোকজনও নিখোঁজ হয়েছেন।
রেনু খাতুন তার স্বামী শের মোহাম্মদসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালে চিকিৎসা নিলেও রেনু খাতুনের দৃঢ় ইচ্ছাশক্তি দমে যায়নি। এ অবস্থায় অভিযুক্ত স্বামীকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।