Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / সরকারি চাকরিজীবী হয়ে নগদ ৩ কোটি টাকা দিয়ে কীভাবে ফ্ল্যাট ক্রয় করে? প্রশ্ন হাইকোর্টের

সরকারি চাকরিজীবী হয়ে নগদ ৩ কোটি টাকা দিয়ে কীভাবে ফ্ল্যাট ক্রয় করে? প্রশ্ন হাইকোর্টের

বরখাস্ত ডিআইজি বজলুর রশিদ নগদ ৩ কোটি টাকা দিয়ে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে ‘রূপায়ণ স্বপ্ন নিলয়’ নামে ৩ হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। একজন সরকারি কর্মচারী কীভাবে কোটি টাকায় এমন ফ্ল্যাট কিনতে পারেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ সাজা বহাল রেখে পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, বজলুর রশীদ পৈতৃক উত্তরাধিকার সূত্রে কোনো সম্পত্তি পাননি। তার একমাত্র বৈধ আয়ের উৎস ছিল সরকারি চাকরি। ২১ বছরের চাকরি থেকে প্রাপ্ত বেতন থেকে পরিবারের খরচ মেটানোর জন্য কোটি কোটি টাকা নগদে জমা হওয়ার ঘটনাটি অবাস্তব, অবিশ্বাস্য এবং কল্পকাহিনীর মত।

জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনের ক্ষেত্রে। গত বছরের ২৩ অক্টোবর বজলুর রশিদকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫। এ ছাড়া ৫ লাখ টাকা জরিমানা এবং ৩ কোটি ১৫ লাখ টাকায় কেনা ফ্ল্যাট রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন কারা কর্মকর্তা। হাইকোর্ট আপিল খারিজ করে বিশেষ জজ আদালতের দেওয়া সাজা বহাল রাখেন।

রায়ে হাইকোর্ট বলেছে, আপিলকারী বজলুর রশীদ ফ্ল্যাট কেনার জন্য ঋণের আবেদন করেছেন বলে লিখিত ও মৌখিক সাক্ষ্যে কোথাও তথ্য দেননি। বরং জেরায় তিনি বলেন, রূপায়ন হাউজিং লিমিটেডকে নগদ টাকা দিয়েছি। তবে জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, ব্যাংক ঋণ ছাড়া ফ্ল্যাট কিনতে পারবেন না। তিনি ব্যাংক ঋণের জন্য আবেদন করেননি। অর্থাৎ আপিলকারী অপরাধের দায় থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য আদালতে একের পর এক মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছেন।

হাইকোর্ট আরও বলেন, একজন ক্রেতা ব্যাংক চেক বা পে-অর্ডারের মাধ্যমে ফ্ল্যাট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে ফ্ল্যাটের মূল্য বা কিস্তি পরিশোধ করেন। আপিলকারীও স্বীকার করেছেন যে তার একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ব্যাংকের চেক বা পে-অর্ডারে কোটি কোটি টাকা না দিয়ে কেন তিনি নগদে পরিশোধ করলেন? একটাই উত্তর, বৈধ না হওয়ায় তিনি ব্যাংকে টাকা জমা দিতে পারেননি।

নথি পর্যালোচনা করে হাইকোর্ট বলেন, বজলুর রশিদের মা নুরজাহান বেওয়ার কোনো আয় নেই। কোনো আয়কর নথি ছিল না। যে দলিল দিয়ে তিনি সম্পত্তির মালিক হয়েছেন সে সময় যেহেতু তার কোনো আয় ছিল না, তাই প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে তিনি সম্পত্তি ক্রয় করলেন? বজলুর রশীদ তার অর্জিত অর্থ দিয়ে উক্ত দলিলের মাধ্যমে মায়ের নামে সম্পত্তি ক্রয় করেন। পরে আপিলকারী ওই সম্পত্তি নিজের নামে দখল করে নেন। আপিলকারীর এ ধরনের আচরণও অনৈতিক। কারণ গর্ভবতী মহিলা অবৈধ অর্থের বৈধতা দিতে মায়ের নাম ব্যবহার করেছেন, যা সন্তানের জন্য কোনোভাবেই কাম্য নয়।

প্রসঙ্গত, বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ১৪ লাখ ৩৫ হাজার ৯০২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে দুদক। কারা ক্যাডারের ১৯৯৩ ব্যাচের কর্মকর্তা বজলুর রশীদ ঢাকায় কারা সদর দফতরে কর্মরত ছিলেন।

About Babu

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *