অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য সম্প্রতি সরকারী কর্মকর্তাদের নতুন গাড়ি কেনা বন্ধ করতে বলেছে সরকার। এই নিয়ে শুরু হয়েছে নানা ধরনের সমালোচানা। এছাড়া ধনীদের ওপর করও বাড়াতে বালা হয়েছে। গত শুক্রবার ১০ জুন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ মাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান সরকার সরকারি ব্যয় হ্রাস, বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ সহায়তার শর্ত পূরণের পদক্ষেপ নিচ্ছে।
220 মিলিয়ন জনসংখ্যার দেশ পাকিস্তান কয়েক বছর ধরে তীব্র অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এক ট্রিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে। এ টাকা দিয়ে ৪৫ দিনের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। তাদের আর্থিক ঘাটতির পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে।
শুক্রবার পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, সরকার ধনীদের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করার পাশাপাশি বিলাসবহুল গাড়ি আমদানি এবং সরকারি কর্মকর্তাদের নতুন গাড়ি কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।
পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করছি… এখানেই শেষ নয়।
পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়ার আগে আর্থিক ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের শর্ত দিয়েছে আইএমএফ। পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে আইএমএফের অন্যতম শর্ত ছিল জ্বালানি ভর্তুকি বাতিল করা। পাকিস্তান সরকার ইতিমধ্যে সেই চাহিদা পূরণ করেছে, যার ফলে দেশে জ্বালানির দাম ৪০ শতাংশ বেড়েছে।
ইসমাইল বলেন, সরকার কর ফাঁকি রোধে পদক্ষেপ নেবে, যা নতুন অর্থবছরে রাজস্ব সংগ্রহ 7 ট্রিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি ($3,745 কোটি) এ পৌঁছাতে এবং রাজস্ব ঘাটতি কমাতে সাহায্য করবে। পাকিস্তান ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪.৯ শতাংশে রাখার চেষ্টা করবে, যা এই বছরের ৭.৮ শতাংশের চেয়ে অনেক কম।
পাকিস্তান ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৯৫০ ০০০ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে। ইসমাইলের মতে, নতুন অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হতে পারে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ।
উল্লেখ্য, সরকাররি কর্মকর্তাদের নতুন গাড়ি কিনার জন্য নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে অনেকের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এছাড়া কর বৃদ্ধি নিয়েও রয়েছে নানা ধরনের বিতর্ক।