সরকারি কোনো কর্মচারীকে যদি গ্রেপ্তার করতে হয়, সেক্ষেত্রে সরকারের নিকট থেকে আগেই অনুমতি নিতে হবে, এমন ধরনের বিধান বাতিল করেছে মাননীয় হাইকোর্ট। এর আগে কয়েকটি মামলার প্রেক্ষাপটে এই ধরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, বলে জানা গেছে। আজ ২৫ শে আগস্ট (বৃহস্পতিবার) বিচারপতি মোঃ মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কাজী মোঃ ইজারুল হক আকন্দ এর সমন্বিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এর মাধ্যমে এ রায় দেওয়া হয়েছে। সরকারি কর্মচারীরা এ বিষয়ে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সরকারের পূর্ব অনুমতি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। বুধবার শুনানি শেষে আদালত আজ রায়ের দিন ধার্য করেন।
হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে আইনজীবী সারোয়ার আহাদ চৌধুরী, একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া ও মাহবুবুল ইসলাম আদালতে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোঃ আজিজুর রহমান দুলু, আইনজীবী ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আইনজীবী মোঃ আজিজুর রহমান বলেন, একটি ফৌজদারি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। ওই মামলায় সুলতানা পারভীনসহ অন্যরা জামিন নেননি। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে জানানো হয়, এসব কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের আগে অনুমতি নিতে হবে। এমনকি, এসএম রাহাতুল ইসলামকে এরই মধ্যে বরিশালে পদায়ন করা হয়েছে। এ অবস্থায় আইনের ৩ ও ৪১ (১) ধারা চ্যালেঞ্জ করে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার পদায়ন ও অন্যদের পদায়ন না করতে ওই রিটটি করা হয়।’
আইনের ৪১(১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেফতার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।’
পরে, অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেছিলেন যে এই রিটটি জনস্বার্থে ১৪ অক্টোবর, ২০১৯ তারিখে দায়ের করা হয়েছিল, পাবলিক সার্ভিস অ্যাক্ট, ২০১৮ এর ধারা ৪১(১) এর অধীনে বিশেষ সুবিধার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে।
তিনি বলেন, একই সুযোগে ২০১৩ সালে দুদক আইনের ৩২(ক) ধারা প্রণীত হলে জনস্বার্থে রিট হলে আদালত আইনটিকে বৈষম্যমূলক বলে বাতিল হিসেবে ঘোষণা করেন। সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একই সুযোগ দেওয়ার জন্য ২০১৮ সালে প্রণীত ওই আইনের ৪১(১) ধারা আদালতের রায়ের পরিপন্থী।
তবে এ ধরনের আইন হওয়ার ফলে সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি কিছুটা হলেও কমবে মনে করা হয়। কোন সরকারি কর্মচারী যদি কোন ধরনের অপরাধের সাথে যুক্ত হয়, সে ক্ষেত্রে তারা অপরাধী এবং তাদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য আনুষ্ঠানিকতার কোন দরকার আছে বলে মনে করেন না অনেকে। তবে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে অভিযোগের বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করতে হবে কিনা সেবিষয়ে কিছু জানা যায়নি।