ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও অবৈধ সরকারের পতনের দাবিতে বিএনপিসহ সব বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এছাড়া ১০ নভেম্বরের মধ্যে সরকার পদত্যাগ করে প্রতিনিধিত্বমূলক রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় সরকারের অধীনে ক্ষমতা হস্তান্তরের আল্টিমেটাম দিয়েছে দলটি।
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দলের আমির ও পীর সাহেব চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম জাতীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আয়োজিত মহাসমাবেশ এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ১০ নভেম্বরের মধ্যে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং নিবন্ধিত ও প্রতিনিধিত্বশীল রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক কারণে কারাবন্দি বিএনপি নেতাদের মুক্তি দিতে হবে এবং রাষ্ট্রপতিকে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করতে হবে। দাবি মানা না হলে সরকার পতনের দাবিতে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা ও অবৈধ সরকারের পতনের দাবিতে বিএনপিসহ সব বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির প্রতি সমর্থন ঘোষণা করছি।
দলটির সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খ চরমোনাই বলেন, আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমি এই দাবি নিয়ে এসেছি। আমরা ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই, সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে চাই এবং দরিদ্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে সরকার ক্ষমতায় থাকতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার ক্ষমতার মজা পেয়ে গেছে। গোটা দেশের মানুষ জেলখানায় আবদ্ধ। এদেশের মানুষের স্বাধীনতা নাই। এই জেলের তালা ভাঙতে হবে। কোন ছলচাতুরি চলবে না। আমরা কারও বিরুদ্ধে নই। এই আন্দোলন যারা ভোট দিতে চায় তাদের জন্য।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন না হওয়ায় বিদেশি শক্তিগুলো নাক গলাচ্ছে। আপনি ব্যাকডোর দিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করলে আমরা লড়াই করবো।
দলটির মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, লাখো মানুষের সমাগম হয়েছে। কাউকে ভাড়া করে আনা হয় নাই। সবাই নিজের পকেটের টাকা খরচ করে পির সাহেবের চরমোনাইয়ের নির্দেশনা পালন করেছে। আগামীতে পির সাহেবের ঘোষিত যে কোনো কর্মসূচি আমরা পালন করবো।
দলের যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, দেশের মানুষ এই সরকারকে বিশ্বাস করে না। আপনার অধীনে নির্বাচন তো দূরের কথা, আপনাকে আর এক মুহূর্ত ক্ষমতায় দেখতে চাই না। যত দ্রুত ক্ষমতায় ছাড়বেন, তত দ্রুত দেশের মানুষ মুক্তি পাবে।
তিনি বলেন, বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করতে পারেননি। দেশের আইন, বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ, নির্বাচন কমিশন সারা দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, আপনারা পদত্যাগ করুন, বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপে বসুন।