Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / সরকারকে অংক কষে দ্রব্য মুল্যের দামবৃদ্ধি বুঝিয়ে দিলেন ফখরুল

সরকারকে অংক কষে দ্রব্য মুল্যের দামবৃদ্ধি বুঝিয়ে দিলেন ফখরুল

বাংলাদেশে ( Bangladesh ) সাধারণ জনগনের নয় বরং ক্ষমতাসীন দলের আয় বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ( Mirza Fakhrul Islam ) আলমগীর। ( Alamgir. ) তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের আয় ১৫ হাজার টাকার বেশি নয়। সরকারের  মাথাপিছু আয়ের বিবরণী এবং উন্নয়নের প্রদর্শনী একটি প্রতারণা। মঙ্গলবার বিকেলে  জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে বিএনপি নেতা এ মন্তব্য করেন।

হাজার কোটি টাকার মালিকের সঙ্গে শ্রমিকের আয়ের তুলনা করে সরকার সাধারণ মানুষকে বোকা বানাচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম ( Mirza Fakhrul Islam ) আলমগীর। ( Alamgir. ) তিনি বলেন, দেশের মানুষের জীবন এখন ঠোঁটে, অর্থাৎ প্রায় ঠোঁটে এসেছে। গত  কয়েক মাস ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে আস্থাশীল হয়ে উঠেছে দেশের মানুষ। সাধারণ মানুষকে বেঁচে থাকার জন্য চাল, ডাল, তেল, লবণ, চিনি ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিতে হয়। এসব জিনিসের দাম বেড়েছে ১০০ শতাংশ, ২০০ শতাংশ ও ৩০০ শতাংশ। আজ সারা দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ শুরু হয়েছে। মানুষ কিছু বলতে পারে না। জনগণকে প্রতিবাদ করার কোনো সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ ) দুপুরে  জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে তাঁতীদের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে অর্থাৎ বিএনপি সরকারের আমলে বাজারে এই চালের দাম ছিল ১৭/১৮ টাকা। এখন এই মোটা চালের দাম বেড়েছে ৬০/৭০ টাকা। একইভাবে প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়েছে তিন থেকে চার গুণ আবার ১০ গুণ।

বর্তমান সরকারের আমলে মন্ত্রীরা সুন্দর কথা বলেছেন, তারা সুন্দর পোশাক পরে এসেছেন, চারিদিকে ফুল ছড়িয়ে আছে, সেখানে ফুলের টব-টপ রয়েছে এবং সেখানে দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। তারা বলছেন, এসব পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে, মানুষের আয়ও বেড়েছে তার চেয়ে বেশি। মানুষের আয় বাড়লে চাল, আটা, গম, তেল, ডালের দামও বাড়ে। তাহলে মানুষের আয়ের ফল কী? দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে ফখরুল বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ সরকারের নেতারা) আবারও বলেছেন, আমরা সব জায়গায় পাগল। অরাজনৈতিক ভাষা, অশ্লীল ভাষা, মাতব্বরি করার প্রশ্নই আসে না, তাকে (আওয়ামী লীগ নেতাদের) ভাষা জানতে হবে। হ্যাঁ আল এটা আমার কাছে বেশ বাজে শোনাচ্ছে, মনে হচ্ছে বিটি আমার জন্য নয়। আমরা যারা অর্থনীতি নিয়ে পড়াশুনা করেছি, শিখিয়েছি, আয়-ব্যয়ের এই হিসাবগুলো আমরা খুব ভালো করে বুঝি। যদি তার আয় বৃদ্ধির সাথে বাড়তি আয় না থাকে, তাহলে সেটা কোনো কাজে আসে না।

বিএনপি নেতা বলেন, মাথাপিছু আয় বেড়েছে বলে ক্ষমতাসীনরা কী হিসাব করে? তিনি দেশের মানুষের আয়ের হিসাব করেন। বাংলাদেশের ৯০% মানুষের মাথাপিছু আয় ১৫ হাজার টাকার বেশি নয়। আমাদের গার্মেন্টসে কাজ করে, রিকশা চালানো, খামারে কাজ করে তাদের আয় মাসে ১৫ হাজার টাকার বেশি নয়। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতা আছেন, এমপি আছেন, মন্ত্রী আছেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, তাদের আয় অনেক বেশি, আওয়ামী লীগ নেতাদেরও হাজার হাজার কোটি টাকা আয় রয়েছে। এখন যদি হিসাব করা হয়, যার আয় মাসে ১০০০ কোটি টাকা এবং যার আয় ১৫ হাজার টাকা, তা কি সমান? ধরুন আমার (ফখরুল) আয় ৫০ হাজার টাকা, আমার এক বোন গার্মেন্টস শ্রমিকের বেতন ১৫ হাজার টাকা। তো কত? ৫০ ও ১৫ মিলে ৬৫ হাজার টাকা। কয়জন, আমরা দুজন আছি, ভাগ করলে দাঁড়ায় ৩২ হাজার টাকা। তাহলে রিকশাচালক ও গার্মেন্টস শ্রমিক ভাই বোনদের বেতন ৩২ হাজার টাকা কি? এর মানে কি বোঝাতে চাচ্ছো? আর কতদিন এই শুভঙ্করের চালাকি দিয়ে মানুষকে বোকা বানাবেন?

সাংসদ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বাইরে আসুন, রাস্তায় মানুষের সঙ্গে কথা বলুন, রিকশাচালক, গার্মেন্টস শ্রমিক, ভাইবোনদের সঙ্গে কথা বলুন, যারা দিনরাত কাজ করেন, হকার, যারা গাড়ি ঠেলে সবজি বিক্রি করেন বা মাছ।” তারা কেমন আছে জিজ্ঞাসা! এখানে বসে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিস-বাড়ি, এসি সব জায়গায় বসে কথা বলা সহজ, কিন্তু মানুষের জীবনের কষ্ট বোঝা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে চলে গেছে, বাংলাদেশকে আর পেছনে তাকাতে হবে না, বাংলাদেশ সিঙ্গাপুর হয়ে গেছে কুয়ালালামপুর আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপি-নেতারা এসব কথা বলেন? কারণ তারা সিঙ্গাপুর এবং কুয়ালালামপুরে বাড়ি তৈরি করেছে। তারা এখান থেকে টাকা লুট করে সেখানে পাঠায়। যে কারণে তারা আজ এসব কথা বলে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, দেশকে দুর্ভিক্ষে ফেলেছে। ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল এবং আজ একই অবস্থা শুরু হয়েছে। সন্তানকে খাওয়াতে না পেরে আজ সন্তানের মুখে বিষ দিয়ে আত্মহনন করছেন মা। ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দেওয়া, গলায় দড়ি দিয়ে মরে যাওয়া এসব ঘটনা আজ প্রতিদিনই ঘটছে। আজ সেই পরিস্থিতিতে জনগণের সঙ্গে রসিকতা করে বলা হচ্ছে, মানুষের আয় বাড়ছে কিন্তু দেশের মানুষের সঙ্গে যারা তামাশা করছে তারাই ভালো।

উল্লেখ্য, মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার তার বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কথা বলার অধিকার থেকে বঞ্চিত। তারা সম্পূর্ণভাবে দাসত্ব করার সব ব্যবস্থা করেছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রয়োজন, যে সরকার আওয়ামী লীগের অধীনে থাকবে না। আন্দোলনের বিকল্প নেই।

About Syful Islam

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *