Monday , November 18 2024
Breaking News
Home / Countrywide / সময় যখন যা ডিমান্ড করবে, তখন সেটাই করবো: বাজিমাত দেওয়া সেই তিন তরুণী

সময় যখন যা ডিমান্ড করবে, তখন সেটাই করবো: বাজিমাত দেওয়া সেই তিন তরুণী

শিক্ষার আলোয় আলোকীত হক আমদের সমাজ। এমনি লক্ষে শিক্ষা দিয়ে এসেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। শিক্ষার্থীদের অক্লান্ত চেষ্টা ও শিক্ষকের শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের সেরা প্রমান করে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু সুমাইয়া জান্নাতুন এবং প্রস্তুতি।

বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের (বিজেএস) ১৪তম সহকারী জজ নিয়োগ পরীক্ষায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের একই বর্ষের তিন শিক্ষার্থী। তারা তাদের মাস্টার্স শেষ করার আগে জীবনে প্রথমবারের মতো নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম, দ্বিতীয় এবং চতুর্থ স্থান অধিকার করেছিল। তাদের সাফল্যে খুশি বিভাগের শিক্ষকরা।

বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন সচিবালয়ের ওয়েবসাইটে এ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। রাবির আইন বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের ছাত্রী সুমাইয়া নাসরিন শামা ১০২ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম হয়েছে। এছাড়া দ্বিতীয় ও চতুর্থ হয়েছেন একই ব্যাচের জান্নাতুন নাঈম মিতু ও ইশরাত জাহান আশা। তিনজনই বর্তমানে রাবির আইন বিভাগে মাস্টার্স পড়ছেন।

প্রথমটি সুমাইয়ার গ্রামের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রামে। তিনি ২০১৩ সালে বড়াইগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক এবং ২০১৫ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। পরে ২০১৫-১৬ সেশনে রবির আইন বিভাগে ভর্তি হন। তার একাডেমিক রেজাল্টও ভালো। অনার্স মেধা তালিকায় দ্বিতীয়। বর্তমানে তিনি মাস্টার্সে অধ্যয়নরত।

মেধায় দ্বিতীয় হওয়া জান্নাতুন নাইম মিতু চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নয়ন-শুকা এলাকায় থাকেন। তিনি মো. নাইমুল ইসলাম ও নাহিদা খাতুনের মেয়ে। মাধ্যমিক (এসএসসি) 2012 সালে নবাবগঞ্জ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পাস।

সুমাইয়া বলেন, “আমার এই ফলাফলের পেছনে পরিবার ও বিভাগের শিক্ষকদের অবদান সবচেয়ে বেশি। সত্যি বলতে, আমি প্রথম হব বলে আশা করিনি। আমার টার্গেট ছিল মেধা তালিকায় নাম তোলা।

পরীক্ষার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিচার বিভাগীয় পরীক্ষায় একাডেমিকভাবে যা পড়ানো হয় তার বেশিরভাগই সেখান থেকে আসে। ফলে বিভাগটির নিবিড় অধ্যয়নের কারণে প্রস্তুতি অনেকাংশে ঢাকা পড়ে যায়। সার্কুলার দেওয়ার পর আবার মনোযোগ দিয়ে কোর্সগুলো পড়ুন। সব মিলিয়ে আল্লাহর অসীম রহমতে হয়েছে।

প্রথমবারের মতো নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দেশের সেরা হওয়া এই শিক্ষার্থী বলেন, “আমার কোনো নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছিল না। আমি বড় হয়ে এই বা ওটা হব। সময় যখন দাবি করবে, আমি তা করব। তিনি বিচার বিভাগীয় পরীক্ষায় আগ্রহী শিক্ষার্থীদের মনোযোগ সহকারে একাডেমিক ক্লাস অধ্যয়নের পরামর্শ দেন।

জান্নাতুন নাঈম মিতু বলেন, ‘অভিভাবক, বিভাগের শিক্ষকরা আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। আমি আমার প্রথম বছর থেকে একাডেমিক পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলাম। বিভাগে ফলাফলও ভালো হয়েছে। আমার বন্ধুরা সবসময় আমাকে উৎসাহিত করেছে। তারা বলতেন, চেষ্টা করলে বিচার বিভাগের পাশাপাশি বিভাগেও প্রথম হতে পারব। যাই হোক, আমি প্রথম হতে না পারলেও দ্বিতীয় হয়েছি। এছাড়া প্রথম ও চতুর্থজন আমার বান্ধবী। বিভাগের মেধা তালিকায় তারা যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় হয়েছে। আমি প্রথম ছিলাম। আল্লাহকে ধন্যবাদ.

বিসিএস ক্যাডার হতে চেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আইন বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক ড. কিন্তু একদিন ক্লাসে তার শিক্ষক একটি কেস পড়ান। যার কাহিনী ছিল বেশ চমকপ্রদ। বিচারও বেশ ভালো ছিল।

মিতু বলেন, রায় শোনার পর আমার মনে হয়েছে, আল্লাহর পর বিচারক ছাড়া এমন রায় আর কেউ দিতে পারে না। সেখান থেকেই আমি বিচারক হওয়ার উৎসাহ পেয়েছি।

প্রস্তুতির বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রথম বছর থেকে শিক্ষকরা আমাকে যা পড়াতেন আমি তা পড়ার চেষ্টা করতাম। এর বাইরে আলাদাভাবে প্রস্তুতি নিতে বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান পড়েছি।

এদিকে সদ্য মুক্তি পাওয়া বিচার বিভাগ থেকে কতজন রবির পাস করেছেন তা জানা যায়নি। তবে বিভাগের শিক্ষকরা বলছেন, পাসের সংখ্যা ১০টির বেশি হবে।শিক্ষার্থীদের ফলাফলে খুশি বিভাগের শিক্ষকরাও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক হাসিবুল আলম প্রধান বলেন, ‘আজ আমাদের আইন বিভাগের জন্য আনন্দ ও গর্বের দিন। ১৪ তম বিজেএস পরীক্ষায় (সহকারী জজ), একই ব্যাচের আমাদের তিনজন ছাত্র প্রথম, দ্বিতীয় এবং চতুর্থ স্থান অর্জন করেছিল। এই ফলাফল প্রমাণ করে রাবির আইন বিভাগই সেরা। আমাদের বিভাগের বিভিন্ন ব্যাচ থেকে সহকারী জজ হিসেবে আরও অনেককে সুপারিশ করা হয়েছে। তাদেরও অভিনন্দন।

তাদের সফল্যে খুশি পরিবার ও শিক্ষকেরা। এছাড়া অনেক নেটিজে তাদের অভিন্দন জানিয়েছেন। শিক্ষকেরা তাদের বিদ্যালয়ের গৌরব বলে আক্ষায়িত করেছেন।

About Nasimul Islam

Check Also

নির্বাচন দিতে দেরি করলে মানুষ সন্দেহ করবে, সমস্যা বাড়বে: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মেয়াদ দীর্ঘ হলে দেশের সমস্যা আরও …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *